সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: গ্রাম পঞ্চায়েতের পর এবার পুরসভাতেও ঢোঁক গিলে জয়ী গোঁজ কাউন্সিলারদের ঘরে ফেরাল তৃণমূল। সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভায় গোঁজ হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করা তিন কাউন্সিলারের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতেই এই যোগদান বলে তৃণমূল দাবী করলেও কোন সমীকরণে এই যোগদান জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক বা বিগত পুরসভা নির্বাচন। উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচনের আগে তৃণমূলের শির্ষ নেতৃত্ব গোঁজ কাটা এড়াতে ঘোষণা করেছিল দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো দলীয় কর্মী প্রতিদ্বন্দিতা করলে তাঁর জন্য দলের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই বদলাতে শুরু করে ছবিটা। বহু ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করতে মরিয়া তৃণমূল দলীয় ঘোষণাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জয়ী গোঁজ প্রার্থীদের দলে ফেরায়। এবার সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি দেখা গেল পুরসভায়। জানা গেছে ২০২২ সালে পুরসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ৮ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয়লাভ করেন তৃণমূলের পরিচিত মুখ যথা সঞ্জয় মুখার্জী ও হীরালাল দত্ত। দলের টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসের টিকিট জোগাড় করে জয় ছিনিয়ে নেন শ্রীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে জিতলেও ওই তিন কাউন্সিলার এতদিন তৃণমূলে ফিরতে পারেননি। তবে শেষ অবধি সোমবার বিষ্ণুপুর বিধায়ক কার্যালয়ে বিধায়ক তন্ময় ঘোষের হাত থেকে তাঁরা তৃণমূলের পতাকা কাঁধে তুলে নেন। দলের টিকিট না পেয়ে এই তিন কাউন্সিলারই যে পুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তা তারা স্বীকারও করে নিয়েছেন। তাদের দাবী উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতেই ফের তাঁরা ফিরছেন নিজের ঘরে। বিধায়কও তাল মিলিয়েছেন দলবদলুদের গলাতে। কিন্তু দলবদলুদের চিরাচরিত যুক্তির আড়ালে কী রয়েছে অন্য কোনো সমীকরণ? অন্তত তেমনটাই দাবী করছে বিরোধী কংগ্রেস ও বিজেপি। দুপক্ষেরই দাবী এভাবে দলবদল আসলে ভোটারদের সাথে প্রতারণাই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct