আপনজন ডেস্ক: বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ‘পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড’ গঠন করা হয়েছে। আর তার পরই জোর তৎপরতা শুরু করে দিয়েছেন ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান সাংসদ সামিরুল ইসলাম। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ অ্যাপ ‘কর্মসাথী পরিযায়ী শ্রমিক পোর্টাল ও অ্যাপ’ চালু করার পর এবার হরিয়ানার দাঙ্গা বিধ্বস্ত নুহ জেলায় গেলেন সেখানে থাকা বাংলা পরিযায়ী শ্রমিকদের হালহকিকত জানতে। হরিয়ানার নুহ জেলায় দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর সাংসদ সামিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে হরিয়ানার দাঙ্গা পীড়িত এলাকায় বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের খোঁজখবর নিতে এসেছিলাম। কিন্তু জানতে পারি এখানে আর বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকরা সেই অর্থে নেই। তবে নুহের পথে বেশ কয়েকজন আসাম থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা হল।
সামিরুল জানান, অসমের ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকরা খুব দুশ্চিন্তায় আছেন। আসাম সরকার তাদের কোন খোঁজ খবর নেয়নি বলে শ্রমিকরা জানিয়েছেন।হরিয়ানা সরকার বুলডোজর চালিয়ে যেসব ঘর-বাড়ি ভেঙে দিয়েছে সেগুলো সাংসদ সামিরুলকে দেখান পরিযায়ী শ্রমিকরা। পরিযায়ী শ্রমিকরা সামিরুলের কাছে অভিযোগ জানান,তাদের সব বৈধ নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র থাকলেও তাদের অনুপ্রবেশকারী বলা হচ্ছে। তাদের সমস্ত কাগজপত্র থানায় জমা রাখা হয়েছে। নুহের তাউরি এলাকায় গিয়ে স্থানীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের দুর্দশার কথা শোনেন সাংসদ। স্থানীয়রা জানান, এখানকার ঐতিহ্য দুই সম্প্রদায়ের মিলেমিশে থাকার ঐতিহ্য। এতদিন কোনও দাঙ্গা হয়নি। নেতাজির ডাকে সাড়া দিয়ে আজাদ হিন্দ বাহিনীতে নাম লিখেছিলেন তাদের পূর্বপুরুষেরা। গান্ধীজীর আহবানে সাড়া দিয়ে তারা দেশভাগের সময় পাকিস্তানে যাননি। আজ বাইরের দাঙ্গাবাজরা এই দাঙ্গা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এলাকার সবচেয়ে বড় মাদ্রাসা ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মুফতিরা দেখা করতে আসেন তার সঙ্গে। তারা সাংসদ সামিরুল মারফত আর্জি জানান, তাদের এই দুঃসময়ে যেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে দাঁড়ান। নুহে শান্তি ফেরাতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তারা। যদিও সব মিলিয়ে এখনো দমবন্ধ পরিবেশে চাপা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে নূহের আমজনতার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct