সজিবুল ইসলাম, ডোমকল, আপনজন: মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে এমনি ইন্ডিয়া জোট হয়েছে,গোটা ভারত বর্ষের নেতারা যখন ইন্ডিয়া জোট করতে ব্যস্ত তখন সেই পরিস্থিতিতে জলঙ্গি ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে ইন্ডিয়া জোটের ছায়া দেখা গিয়েছে, যেমন সাদিখান দেয়ার গ্রাম পঞ্চায়েতে বাম কংগ্রেস মিলে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীকে প্রধান নির্বাচিত করেছেন সেই রকমি আবার ঘোষপাড়া পঞ্চায়েতে বাম কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট করে তৃণমূলের প্রধান ও কংগ্রেসের উপ প্রধান করা হয়েছে, তার পরে সোমবার ছিল জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনে সেখানেও বাম কংগ্রেস ও তৃণমূলের জোট অর্থাৎ ইন্ডিয়া জোটের ছায়া লক্ষ করা গেলো।ডোমকল মহকুমার চারটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে সব'কটির বোর্ড গঠন পর্ব শেষ হয় সোমবার । এদিন পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় সম্পন্ন হয় মহকুমার তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন যেমন রানিনগর-১, ডোমকল, জলঙ্গি,তিনটি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে দুটিতে তৃণমূল একাই বোর্ড গঠন করেন।আর জলঙ্গি পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম কংগ্রেস বিজেপির সমর্থনে পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়। যদিও সভাপতি নির্বাচিত হয় তৃণমূলের,পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ডে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দুই সদস্যের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রে জানা যায়। যার মধ্যে বিধায়ক অনুগামী কবিরুল ইসলাম ও জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকি'র অনুগামী সদস্যদের থেকে ব্লক সভাপতি মোহিত দেবনাথ নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ভোটাভুটিতে দেখা যায় বিধায়ক পক্ষের কবিরুল ইসলাম ১৯ জয়ী সদস্যের সমর্থন পায়। এবং সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সভাপতি নির্বাচিত হন,পাশপাশি সহ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী মারিয়াম খানাম। জানা যায় , পঞ্চায়েত সমিতির ৩০ টি আসনের ১৫ টি আসনে জয়লাভ করেছিল তৃণমূল , সিপিএম ৬ টি , কংগ্রেস ৬ টি ,বিজেপি ২ টি আসনে এবং ১ টি আসনে জয়লাভ করেছিল নির্দল। তার মধ্যে বিধায়ক অনুগামীর চার তৃণমূল সদস্য ছাড়াও সমস্ত বিরোধী দল বোর্ড গঠনে কবিরুল ইসলামকেই সমর্থন করে বলেই সূত্রের খবর। এদিন বোর্ড গঠনের পর তৃণমূল সদস্যদের পাশপাশি বাম কংগ্রেস বিজেপির জয়ী সদস্যদের হাসিমুখে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। তৃণমূল সমর্থকদের বিজয় উল্লাসে আবির নিয়ে মেতে উঠে কর্মী সমর্থকেরা।
বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শেষের প্রায় আধঘন্টা পর পঞ্চায়েত সমিতি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায় রাকিবুল ইসলাম রকির অনুগামী ১১ সদস্যকে। যদিও তারা এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি । তৃণমূল জেলা যুব সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রকি বলেন , তৃণমূলের কাছে বোর্ড গঠনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল তারপরেও শুধু নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য তারা নীতিআদর্শ ভুলে বাম কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে বোর্ড দখল করল। বিধায়ক পক্ষের তৃণমূলকে সমর্থন দেওয়ার বিনিময়ে কংগ্রেসকে সহসভাপতির পদ উপহার দেওয়া হয়েছে তেমনি আগামীদিনে সিপিএমকে কর্মধ্যক্ষ পদ দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত সমিতির নবনিযুক্ত সভাপতি কবিরুল ইসলাম জানান, তৃণমূলের যারাই আমাদের ভোট দিয়ে থাকুক না কেন, আমরা সবাইকে সাথে নিয়েই কাজ করব।জেলা যুব সভাপতির এক অনুগামী বলেন, এটা অশুভ আতাত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক জয়ী সদস্য বলেন , দুই তৃণমূলের মধ্যে যারা দুর্নীতিমুক্ত তৃণমূল আমরা তাকে ভোট দিয়েই সভাপতি নির্বাচিত করেছি। ডোমকল পঞ্চায়েতে সমিতির বোর্ড দখল করল তৃণমূল।বোর্ডের ২৭ জন সদস্যের মধ্যে ২০ জন সদস্যের সমর্থন পেয়ে বোর্ডের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শাহানা বিশ্বাস এবং সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন আরাফাতন মন্ডল। এদিকে রানিনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতি থাকল তৃণমূলের দখলেই। রানিনগর ১ পঞ্চায়েত সমিতির ১৮ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১২ টি আসন , বাম কংগ্রেস সম্মিলিতভাবে ৫ টি আসনে জয়লাভ করেছিল ,বিজেপি পেয়েছিলো ১ টি আসন। সোমবার বোর্ড গঠনের সময় দেখা যায় বোর্ডে তৃণমূলকে সমর্থন করে বিজেপি সদস্য ।বোর্ডের ১৩ জন সদস্যের সমর্থনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চয়ন বিবি এবং সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন নূর আলম শেখ।জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক বলেন জনগণের জয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়। তিনি আরও বলেন ভোটাভুটির মধ্যে কে বা কারা কারা ভোট দিয়েছে সেটা বলতে পারবো না, দলের প্রার্থীর নাম প্রস্তাব দিয়া হয়েছিল সভাপতির জন্য সেই মতো ভোটাভুটি হয়েছে আর তাতেই তৃণমূলের জয় হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct