সারিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, আপনজন: মুর্শিদাবাদ জেলার বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ শহরের হাজারদুয়ারি। পাশাপাশি কাঠগোলা বাগান, মতিঝিল পার্ক, কাটরা মসজিদ সহ একাধিক পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে সেরকমভাবে দেখা নেই পর্যটকের। কিন্তু তারপরেও মুর্শিদাবাদ শহরের সমস্ত হোটেলগুলোতে আগস্টের ১২ তারিখ অব্দি খালি নেই কোন রুম।সম্প্রতি এমনই চিত্র দেখা গেল মুর্শিদাবাদ শহরের বিভিন্ন হোটেল গুলিতে।অনলাইন-অফলাইন কোনভাবেই হোটেল বুক করা সম্ভব হচ্ছে না বাইরের পর্যটকদের কাছে। হোটেলে যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে- ‘আগামী ১২ তারিখ পর্যন্ত কোনো রুম দিতে পারবো না।’ভরা মরশুমে অর্থাৎ ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে পর্যটকের ঢল নামে মুর্শিদাবাদ শহরে। একমাত্র তখনই হোটেলগুলো পুরোপুরি বুকিং থাকে। কিন্তু পর্যটকের দেখা নেই অথচ হোটেলে রুম খালি পাওয়া যাচ্ছে না। এ ধরনের চিত্র দেখে প্রায় সকলেই অবাক হয়েছেন।নদীয়ার করিমপুরের বাসিন্দা অভিরাজ সাহা স-পরিবারে মুর্শিদাবাদ শহর ঘুরতে আসার কথা ভেবেছিলেন, কিন্তু কোনো হোটেলে কোনরকম রুম খালি পাননি। তিনি বলেন, ‘ছোট বড় সব মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশের বেশি হোটেলে খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু সব হোটেলের একই বক্তব্য, ১২ ই আগস্ট পর্যন্ত কোন ঘর দিতে পারবো না দাদা।’সম্প্রতি কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ৮ আগস্ট মঙ্গলবার থেকে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন শুরু হচ্ছে। ১০-১১ তারিখের মধ্যে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন মিটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শহরের একাধিক হোটেলে তথ্য নিয়ে গোপন সূত্রে জানতে পারা গিয়েছে, বুকিং করা রুমে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। মুর্শিদাবাদের বহু পঞ্চায়েতে এখনো ত্রিশঙ্কু অবস্থা। বিরোধীদের একটা অংশ দাবি করেছেন, অনেক জায়গায় এক দুটি আসনে পিছিয়ে পড়লেও বোর্ড গঠনে মরিয়া হয়ে উঠেছে শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে দলের জয়ী সদস্যদের লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করলেও মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘জেলা জুড়ে যেভাবে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের জয়ী সদস্যদের অপহরণ করে দল বদলে বাধ্য করা হচ্ছে, তাতে এরকমটা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।’পাশাপাশি দেখা গিয়েছে বিভিন্ন হোটেলে শাসক দলের জয়ী সদস্যদেরও। যদিও এ বিষয়ে জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কানাইচন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘ভোটের পর থেকেই কর্মীরা ক্লান্ত। মাথা হালকা করতেই ওরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাকছে, এর সঙ্গে বোর্ড গঠনের কোনো সম্পর্ক নেই।’এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct