আপনজন ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৮ জুলাই। গণনা হয় ১১ জুলাই। পঞ্চায়েতের দিন ঘোষণা থেকে ফল ঘোষণা পর্যন্ত রাজনৈতিক সংঘর্ষে ৫৪ জনের মৃত্যু হয়। শুধু ভোটের দিনই ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপর গণনাকে কেন্দ্র করে কারচুপির অভিযোগকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চ জানিয়েছিল, আদালত চূড়ান্ত রায় না দেওয়া পর্যন্ত রাজ্যের কোথাও পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করা যাবে না। ফলে, একমাস ধরে স্থগিত রয়েছে ফল ঘোষণা। বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানি। সেই মামলায় চূড়ান্ত রায না মেলায় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১৯ আগস্ট। ফলে আগামী ১৭ আগস্টের আগে রাজ্যের কোনও পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন করা সম্ভব হচ্ছে না। বিএসএফের পেশ করা রিপোর্ট ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পেশ করা হলফনামা পড়ে ১৭ আগস্ট মামলায় পরবর্তী নির্দেশ দেবে আদালত। তবে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পঞ্চাশেরও অধিক প্রাণ যাওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। এদিন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যারা মারা গিয়েছেন তাদের আর প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষতিপূরণ ধার্য করেও প্রাণহানির ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। এদিকে, এদিন আদালতের নির্দেশে হলফনামা পেশ করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই হলফনামায় তারা দাবি করেছে কমিশনের তরফে আদালতের নির্দেশ মেনে নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৮২২ কোম্পানি আধাসেনা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোটের দিন পর্যন্ত ৬৩৭ কোম্পানি বাহিনী পেয়েছে কমিশন। সেই সমস্ত বাহিনী বুথে বুথে মোতায়েন ছিল। যদিও ডিভিশন বেঞ্চে দু’হাজার পাতার যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটর এসসি বুদাকোটি, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা দেওয়া হয়নি। এর আগে বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ১২০০ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছেন বিএসএফের আইজি। এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাদের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারবে না আদালত। ক্ষতিপূরণ ধার্য করেও প্রাণহানির ক্ষতিপূরণ সম্ভব নয়। তিনি জানান, সমস্ত রিপোর্ট পড়ে তার পর মামলার শুনানি করতে চায় আদালত। যার ফলে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হল আগামী ১৭ অগাস্ট। বলে রাখি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সঠিক ভাবে মোতায়েন করা হয়নি, এই অভিযোগ তুলে কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছেন শুভেন্দু অধিকারীসহ বিভিন্ন ব্যক্তি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct