আপনজন ডেস্ক: বারাণসীর জ্ঞানবাপি মসজিদ প্রাঙ্গণে ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাকে (এএসআই) দিয়ে বৈজ্ঞানিক জরিপ পরিচালনার জন্য বারাণসী জেলা আদালত ২১ জুলাই আদেশ দিয়েছিল। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থাকে (এএসআই) ২৬ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, জ্ঞানবাপি মসজিদ কমিটিকে বারাণসীর আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজনীয় সুযোগ দিতে হবে। তাদের ‘দম নেওয়ার’ সুযোগ দিতে হবে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এলাহাবাদ হাইকোর্টের রেজিস্ট্রিকে নির্দেশ দিয়েছে, ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় শীর্ষ আদালতের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মসজিদ কর্তৃপক্ষ যদি আবেদন করে তবে উপযুক্ত বেঞ্চের সামনে শুনানির জন্য আবেদনটি পেশ করতে। মসজিদ কমিটির প্রতিনিধিত্বকারী প্রবীণ আইনজীবী হুজেইফা আহমাদি জরুরি মৌখিক উল্লেখের বিষয়টি আদালত লক্ষ্য করে বলেন, জেলা আদালত ২১ জুলাই বিকাল সাড়ে ৪টায় ‘বৈজ্ঞানিক জরিপের’ নির্দেশ দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, সোমবার থেকে জরিপ শুরু হয়েছে। এটি ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এই মসজিদটি ১৬০০ এর দশক থেকে একটি উপাসনার স্থান। তিনি জানতে চান, হিন্দু মন্দিরের আগে থেকেই কোনও কাঠামো ছিল কি না। এমনকি আপিল করার জন্যও আমাদের সময় দেওয়া হয়নি। আদেশে বিশেষভাবে বলা হয়েছে যে সম্পত্তির বৈজ্ঞানিক তদন্ত, জরিপ বা খনন কাজ এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অবমাননার শামিল হবে। তিনি বলেন, সপ্তদশ শতাব্দীর মসজিদ নির্মাণের জন্য কোনও হিন্দু মন্দির আংশিক ধ্বংস করা হয়েছিল কিনা তা নির্ধারণের জন্য এলাহাবাদ হাইকোর্ট এর আগে প্রাঙ্গণের বিতর্কিত প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ স্থগিত করেছিল। আহমাদি বলেন, জেলা আদালতের ‘বৈজ্ঞানিক জরিপ বাখননের’ আদেশ হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করেছে। প্রাঙ্গণে যে কোনও খনন কাজ ওজুখানা এলাকা সিল করার সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে বিঘ্নিত করার ঝুঁকি তৈরি করবে। হিন্দু পক্ষ দাবি করে, সেখানে একটি শিবলিঙ্গ পাওয়া গেছে এবং মুসলিম পক্ষ দাবি করেছে যে এটি একটি ঝর্ণা। আহমাদি প্রশ্ন তোলেন, জেলা আদালত কীভাবে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সংগ্রহের আদেশ দিতে পারে যখন সিভিল প্রসিডিউর কোডের আদেশ ৭, বিধি ১১ (মামলার রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত) এর অধীনে মামলায় মৌখিক সাক্ষ্যগ্রহণ এখনও শুরু হয়নি। অথচ তারা ইতিমধ্যে পশ্চিম দেয়াল খনন শুরু করেছে। হিন্দু মহিলা বাদীদের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট শ্যাম দিওয়ান বলেন, জরিপটি “আক্রমণাত্মক নয়” এবং এতে খনন অন্তর্ভুক্ত ছিল না। জেলা আদালত এএসআইকে স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছিল যে সিল করা ওজুখানা এলাকায় বিঘ্ন ঘটাবেন না। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, যিনি উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ঘটনাস্থলে এএসআই কর্মকর্তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করার পরে বলেন, “একটি ইটও সরানো হয়নি”। তিনি বলেন, জরিপ দলটি কেবল ম্যাপিং, গ্রাউন্ড-পেনিট্রেটিং রাডার জরিপ এবং ফটোগ্রাফি পরিচালনা করছে। মেহতা বলেন, এএসআই এক সপ্তাহ ধরে কোনও খননের কথা ভাবছে না, যার ফলে মসজিদ ম্যানেজমেন্টকে পারত্রাণের জন্য হাইকোর্টে যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তারপর ২১ জুলাইয়ের বারাণসী আদালতের আদেশ স্থগিত করার জন্য বেঞ্চের কাছে আবেদন করেন আহমাদি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় মামলা নিষ্পত্তি করে বলেন, ২৬ জুলাই বিকেল ৫টা পর্যন্ত জেলা আদালতের আদেশ কার্যকর করা হবে না। আপনারা আগামীকাল হাইকোর্টে যেতে পারেন। আমরা বুধবার পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিচ্ছি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct