নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূপগুড়ি, আপনজন: মাত্র বছর ২৫এর প্রাণবন্ত যুবক পার্থ রাভা। বাড়ির লোক বলতে মা, বাবা, দুই ছোট ভাই। ধূপগুড়ি ব্লকের মরাঘাট রেঞ্জ লাগোয়া গোঁসাইহাট বন বস্তির যুবক। নিজের পড়াশুনোর গণ্ডি না পেরোতেই সংসারের হাল ফেরাতে কেরোলে ছুটতে হয় টাকা রোজগারের জন্য। একটি বেসরকারি কোম্পানীর মাইন্ড ব্লাস্টিং এর কাজে যোগ দেয় পার্থ। হাজারো ঝুঁকি এই কাজে জানা সত্বেও গরীব ঘরের ছেলে বাধ্য হয়েই বেছে নেয় এই কাজ। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস যে পালটে দিল সবটাই। গত ১৯জুলাই কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রাণ হারায় পার্থ।এ রাজ্যে যে নেই কাজ। কি করবে তাই পার্থরা। তাইতো বারবার কাজের তাগিদে ছুটে যেতে হয় ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে। অন্যদিকে ফরেস্ট লাগোয়া বস্তির ছেলে সে, কাজ নেই। ফরেস্টে সাধারণ জ্বালানির কাঠ সংগ্রহ করতে ঢুকলে রাজ্য বন দফতরের সরকারি গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়। মাত্র কয়েকদিন আগেও এই বন বস্তির মানুষ চাক্ষুষ করেছে সেই নির্মম হত্যার। আজ গ্রামের সেই ছুটে বেড়ানো প্রাণবন্ত যুবক পার্থর দেহ কেরল থেকে আকাশ পথ হয়ে প্রথমে শিলিগুড়ি, তারপরে অ্যাম্বুলেন্স করে নিজের বাড়িতে এসে পৌছাল। দেহ গ্রামে ঢুকতেই গোটা বন বস্তির মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়ে। নিজ বাসস্থানে রাভা জন জাতির বিশেষ রীতি মেনেই শেষকৃত্য করা হয়। পার্থকে একবারের জন্য শেষ দেখা দেখতে পার্শ্ববর্তি বন বস্তির রাভা সম্প্রদায়ের মানুষেরও ভিড় জমায়। জানা যায় ,শুধুমাত্র এই গোঁসাইহাট বন বস্তি থেকে কুড়ির জনের অধিক মানুষ ঘর ছাড়া কেরোলে কাজের তাগিদে। রাজ্যে কাজ না থাকায় না না জানি আরও কতো পার্থ এভাবে হারিয়ে যাবে, ফাঁকা হয়ে যাবে মায়ের কোল। তারপরও কি হুঁশ ফিরবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct