আপনজন ডেস্ক: মণিপুরের ভাইরাল ভিডিও নিয়ে উত্তাল দেশ। যা গত ৪ মে-র বলে দাবি করেছে মণিপুর পুলিশ। মণিপুরে থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে সহিংসতার সেই ভিডিও নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ভারতীয় সংসদের বাদল অধিবেশন। প্রথম দিনেই মণিপুর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য কংগ্রেসসহ বিরোধীরা মুলতবি প্রস্তাব জমা দেন। সরকারপক্ষও আলোচনায় রাজি। সংসদের বর্ষা কালীন অধিবেশনের উদ্বোধনী দিনে কংগ্রেস প্রধান ও রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বিজেপি শাসিত মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানান। বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতারা খাড়গের চেম্বারে বৈঠক করেন, যার পরে ঐক্যবদ্ধ বিরোধীরা সংসদের উভয় কক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে স্বতঃপ্রণোদিত বিবৃতি দাবি করে। খাড়গে বলেন, মণিপুর জ্বলছে। নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, নগ্ন করে ঘোরাফেরা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী চুপ করে আছেন। তিনি বাইরে বিবৃতি দিচ্ছেন। আমরা মণিপুর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা চাই এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির উচিত সংসদে এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দেওয়া। খাড়গে আরও বলেন, আমরা অবিলম্বে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানাচ্ছি। খাড়গে এবং আরও বেশ কয়েকজন বিরোধী সদস্য সংসদের উভয় কক্ষে নোটিশ দিয়ে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার দাবি জানান। কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী লোকসভায় বলেন, “আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে আমরা উভয় কক্ষে মণিপুর নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। মণিপুর একটি স্পর্শকাতর বিষয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে বিস্তারিত জবাব দেবেন। স্পিকারকে আলোচনার তারিখ ঠিক করতে দিন। ভিডিওটিতে যে ভয়াবহ দৃশ্য দেখা গেছে, তা গত ৪ মে ধারণ করা। আগের দিনই হিন্দু মেইতি ও খ্রিস্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জাতিগত দাঙ্গায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে, দুই মণিপুরি তরুণীকে বিবস্ত্র করে এক দল উত্তেজিত জনতা রাস্তা দিয়ে হাঁটিয়ে একটি মাঠে নিয়ে যাচ্ছে। সেই মাঠে ওই দুই নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এত দিন পর ওই পুরনো ভিডিও কী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল, কারা তা করল, কোন উদ্দেশ্যে—তা দ্রুত আলোচনায় উঠে আসে।গতকাল বুধবার রাতেই কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় তৎপর হয়ে ওঠে। সামাজিক মাধ্যম কেন ওই ভিডিও বন্ধে উদ্যোগী হল না, সেই প্রশ্ন আলোচিত হতে থাকে। বৃহস্পতিবার টুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘মণিপুরের ভয়াবহ ভিডিও দেখে আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। দুই মহিলার উপর উন্মত্ত জনতার নির্মমতা দেখে মনে তৈরি হয়েছে ক্রোধ। প্রান্তিক শ্রেণির নারীদের উপর যে হিংসা হয়েছে, তা দেখার কষ্ট এবং যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। বর্বরোচিত এই কাজ সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই অমানবিক অত্য়াচারের প্রতিবাদে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দাঁড়াতে হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct