মোল্লা মুয়াজ ইসলাম, জামালপুর, আপনজন: সদ্য হয়ে যাওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিআইএম এর ফল ভালো হয়নি । রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তি হয়েছে শাসক দল ও সিপিআইএমের মধ্যে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ষড়যন্ত্র করে ভোট বৈতরণী পার হতে চেয়েছিল সিপিএম এই অভিযোগ তুলর তৃণমূল। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটে সিপিআইএম এর দুই প্রার্থী স্বামী ও স্ত্রী যথাক্রমে সুশান্ত মন্ডল ও দেবিকা দেবনাথ। জামালপুরে উত্তর মোহনপুরে বাড়ি। ভোটের আগে তাদের বাড়িতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বোমা ফেলেছে বলে অভিযো্গ করা হয়। তাদের বাড়ি থেকে দুটি বোমা উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে সাথে সাথেই তাদের বাড়িতে যায় জামালপুর থানার পুলিশ। বোমা উদ্ধার করে আনেন তাঁরা। জামালপুর থানার পুলিশ শুরু করে তদন্ত। তদন্ত করতে গিয়ে তাঁদের সন্দেহ হয় রাম সরকার নামে এক ফুচকা বিক্রেতাকে যে এলাকায় সক্রিয় সিপিএম কর্মী বলে পরিচিত। তারউপর নজর রাখে পুলিশ। নির্দিষ্ট কিছু সূত্র পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় ডাকেন তাঁরা। তৃণমূলের দাবি জিজ্ঞাসাবাদের সময়ই সে স্বীকার করে যে ওই বোমা ফেলা ছিল সিপিএমের দুই প্রার্থীদের সুশান্ত মন্ডল ও দেবিকা দেবনাথের ষড়যন্ত্র। ভোট জেতার জন্য তারা খুব সুন্দর ভাবে একটি প্ল্যান করে। রামকে সঙ্গী করে তারা।
ঘটনার দিন রাতে সে দোলোর ডাঙ্গায় সিপিএমের পার্টি অফিস সন্নিহিত অঞ্চলে রাত্রি কালীন একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতার ওখানে ফুচকা বিক্রি করছিল। সেই সময়ই তার কাছে বোমা গুলি পৌঁছে দেয় সুশান্ত বাবু। সে বাড়ি ফিরে আসার সময় দুটি বোমা তাদের দরজার সামনে রেখে একটি বোমা ফাটিয়ে নিজের বাড়িতে ঢুকে যায়। এই সমস্ত কথা সে জেরায় স্বীকার করেছে বলে জামালপুর থানা সূত্রে জানা যায়। বোমা ফাটার ঘটনায় সিপিএম পার্টির পক্ষ থেকে জামালপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগও করা হয়। তারই ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ রাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে তুলে ১০দিন তাঁদের হেফাজতে চান। আদালত তাকে ৭ দিন পুলিশ হেফাজত দেয়। এই বিষয় নিয়ে মুখে কুলুপ সিপিএম ব্লক নেতৃত্বের। তাঁরা এটি বিচারাধীন বলে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান নি। এদিকে এইঘটনায় সিপিএম কে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ব্লক সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন ঘটনা ঘটার সময়ই তিনি বলেছিলেন এটি সিপিআইএমের সাজানো ঘটনা। এখন সেটা প্রমাণ হয়ে গেলো। কিন্তু এত সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করেও তাদের লাভের লাভ কিছুই হয় নি।মানুষ তাদের ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। আসলে এই দলটির ও তাদের নেতাদের নূন্যতম লজ্জা বলে কিছু নাই। তিনি চান অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। পুলিশ প্রশাসনের প্রতি তাঁদের আস্থা আছে বলে তিনি জানান। আমরা যোগাযোগ করেছিলাম সিপিআইএমের প্রাক্তন বিধায়ক সমর হাজরার সাথে। তিনি প্রাথমিক কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তিনি বলেছেন দল ভালোভাবে পর্যালোচনা করে তারপর তাঁরা বক্তব্য দেবেন। সিপিএম নেতা সুকুমার মিত্র বিচারাধীন বিষয় বলে এড়িয়ে গেলেও তিনি বলেন এই ধরনের কোনো ঘটনা কেউ ঘটালে দল তার পাশে থাকবে না। সুশান্ত মন্ডল ও দেবিকা দেবনাথ দলের সেভাবে কেই গুরুত্বপূর্ন কেউ নয়। দল পঞ্চায়েতে সাধারণ মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করেছিল। তবে তারা সিপিএম কর্মী সেটা তিনি স্বীকার করে নেন।এদিকে রাম সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিপিআইএমের প্রার্থী সুশান্ত মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে জামালপুর থানার পুলিশ। তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার পর আদালতে পেশ করা হয়। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেবার আবেদন করা হবে আদালতে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct