পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতী নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে। দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়ে গেছে ৮ জুলাই ২০২৩, ফলাফল ও ঘোষিত হবে ১১ জুলাই। সকলেই যেন এই ভরা বর্ষায় মেতে উঠেছে স্থানীয় গণতান্ত্রিক মহোৎসবে। লিখেছেন এম ওয়াহেদুর রহমান।
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েতী নির্বাচনের দামামা বেজে উঠেছে। দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়ে গেছে ৮ জুলাই ২০২৩, ফলাফল ও ঘোষিত হবে ১১ জুলাই। সকলেই যেন এই ভরা বর্ষায় মেতে উঠেছে স্থানীয় গণতান্ত্রিক মহোৎসবে। কি আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা কখনো তো পাড়ার চায়ের দোকানে কিংবা কখনো তো বাজারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজনৈতিক আলোচনায়। হাট বাজারের পণ্যের ন্যায় কখনো তো টাকার বিনিময়ে অথবা অন্য কোনো কিছুর বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে ভোট। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় জমে উঠেছে মাংস ভাত, ঠান্ডা পানি, পান,বিড়ি, সিগারেটের আড্ডা। তার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মনে বাসা বাঁধছে কি করে, কোন কৌশলে ভোট বৈতরণী পার হওয়া যায়। কখনো তাদের মনের গহীনে উঁকি দিচ্ছে জোর পূর্বক ভোটে জয়ী হওয়ার পরিকল্পনা। গণতান্ত্রিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হচ্ছে এই পঞ্চায়েতি নির্বাচন। গণতন্ত্রই মানুষের আশা ভরসার ঢাল।এই গণতন্ত্রের স্বরুপ উন্মোচিত হয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। আর নির্বাচনী রঙ্গমঞ্চে স্বার্থক প্রবেশ ঘটে রাজনৈতিক দলগুলির। রাজনৈতিক দলগুলি নির্দিষ্ট আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে গড়ে উঠে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে অনেক সময় দলীয় কর্মীরা অনেকটাই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পড়ে, ফলস্বরূপ দেখা দেয় অনৈতিক কার্যকলাপ। এই কারণে ঘটে যায় মনুষ্যত্ব বির্বজিত কর্মকাণ্ড! নির্বাচনের বহিঃ প্রকাশ ঘটে থাকে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে। ভোটাধিকারের অর্থই হলো মতামত জ্ঞাপন করা। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা দেয় সমর্থন সংগ্ৰহের জন্য উৎকোচ দান, ভীতি প্রদর্শন, রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি, রিগিং, বুথ দখল, ভোটাধিকার অপহরণ। এমনকি ব্যালট বাক্সের কারচুপি প্রভৃতি। আর এই সবের মাঝেই ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় ভোট কর্মী হিসেবে নিযুক্ত বিভিন্ন সরকারি কর্মচারীদের। ভোট কর্মীগণ তাঁদের দায়িত্ব ভার বহন করে চলেন অনেকটাই জীবনের ঝুকি নিয়ে। ফলে ভোট কর্মীদের কপালে দেখা দেয় চিন্তার ভাঁজ। অথচ ভোট কর্মীদের জন্যই ভোটাধিকারের বাস্তব প্রয়োগ ঘটে। আসন্ন এই ত্রি স্তর বিশিষ্ট পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ভরা বর্ষায়। ভোট কর্মীদের ভোট নিতে গিয়ে বিবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় - হয়তো কোনো বুথে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো থাকে না, হয়তো ঠিকমতো খাবার জোটে না, হয়তো ঠিকমতো জল জোটে না প্রভৃতি। ভোট কর্মীদের ভোট করতে গিয়ে অনেক সময় সাপের উপদ্রবের সমুক্ষীন ও হতে হয়, কখনো বা মশার কামড়ের আঘাত সহ্য করতে হয়। আসলে গণতন্ত্রের আদর্শময় চরিত্র হয়তো অনেকটাই ক্ষয়ীষ্ণু হয়ে পড়েছে কিংবা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটেছে। আর রাজনীতি ও হয়তো কিছু টা হিংস্র হয়ে পড়েছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো তে রাজনীতির অঙ্গনে রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শময় কার্যকলাপ ই পারে সকল ভীতিকর পরিস্থিতির উচ্ছেদ করতে, তবেই বিকশিত হবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct