রাভিশ কুমার এক নামকরা সাংবাদিক। টিভি সাংবাদিক। তিনি ছিলেন এন্ডি্টিভিতে। সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন তিনি। তার একদিন পরে বোর্ডের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন প্রণয় রায় ও রাধিকা রায়। তা নিয়ে লিখেছেন বিশিষ্ট্য প্রাবন্ধিক দিলীপ মজুমদার।
রাভিশ কুমার এক নামকরা সাংবাদিক। টিভি সাংবাদিক। তিনি ছিলেন এন্ডি্টিভিতে। সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন তিনি। তার একদিন পরে বোর্ডের পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন প্রণয় রায় ও রাধিকা রায়।রাভিশকুমার বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার জিতওয়ারপুর গ্রামের সন্তান। লায়েলা হাইস্কুলের পাঠ শেষ করে তিনি দিল্লির দেশবন্ধু কলেজ থেকে স্নাতক হন। তারপর সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ইণ্ডিয়ান ইনস্টিটিটুট অব মাস কমিউনিকেশন থেকে। ১৯৯৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্ত ছিলেন এনডিটিভিতে। চ্যানেলের ফ্ল্যাগশিপ সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘প্রাইম টাইম’, ‘হাম লগ’, ‘দেশ কি বাত’, ‘রাভিশ কি রিপোর্ট’ অনুষ্ঠানগুলি পরিচালনা করতেন রাভিশ।রাভিশ তাঁর যোগ্যতার পুরস্কারও পেয়েছেন। পেয়েছেন রামনাথ গোয়েঙ্কা এক্সিলেন্স ইন জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড, গৌরী লঙ্কেশ পুরস্কার, কুলদীপ নায়ার সাংবাদিকতা পুরস্কার, গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থী পুরস্কার, ম্যাগসেসে পুরস্কার। চ্যানেলের প্রেসিডেন্ট সুপর্ণা সিং বলেছেন, ‘খুব কম সাংবাদিক রাভিশের মতো সাধারণ মানুষের মনে প্রভাব ফেলতে পেরেছেন।‘সেই রাভিশকুমার কেন পদত্যাগ করতে গেলেন এনডিটিভি থেকে ? কারণ এই টিভির ২৯% শেয়ার আদানিদের হাতে হস্তান্তরিত হয়। পরবর্তীকালে আরও ২৬% শেয়ার কিনে নিতে প্রস্তুত আদানিরা এবং এর জন্য তারা দিতে চেয়েছে ৪৯৫ কোটি টাকা।তা আদানি শেয়ার কিনলে রাভিশের গাত্রদাহ কেন ? এইখানেই এসে যায় ‘গোদি মিডিয়া’র কথা। এই নামটি দিয়েছেন রাভিশকুমারই। আদানি আমাদের নরেন্দ্র দামোদর মোদিজির প্রিয়পাত্র। মোদিজি চান দেশের সব মিডিয়া তাঁর তাঁবে থাকুক, তাঁর গুণগাণ গাইতে থাকুক, দিনকে রাত রাতকে দিন করে দিক, আর এইভাবে বুড়বক জনতার মগজ ধোলাই করে যাক।এই দেখুন না, মোদিজি গেলেন আমেরিকা। ‘গোদি মিডিয়া’ প্রচার করতে শুরু করে দিল আমেরিকায় মোদি ম্যানিয়ার কথা। কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে চোখা চোখা প্রশ্ন যে সাংবাদিকরা করলেন, মোদিজি যে অপ্রস্তুত হলেন, রাস্তায় যে বিক্ষোভ হল, সে কথা বেমালুম চেপে গেলেন তাঁরা।পদত্যাগ করে রাভিশকুমার তাঁর ইউ টিউব চ্যানেলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে বলেছেন, ‘ভারতের সাংবাদিকতায় কোনদিনও স্বর্ণযুগ ছিল না। তবে বর্তমানে সাংবাদিকতার ভস্মযুগ শুরু হয়েছে। সাংবাদিকতায় যা সব ভালো রয়েছে তা ভস্ম করে দেওয়া হচ্ছে। ভারতে একাধিক নামে বহু চ্যানেল রয়েছে। তবে আখেরে সবই তো গোদি মিডিয়া। ‘হিন্দিতে ‘গোদি’ বলতে বোঝায় ‘কোল’। তাহলে ‘গোদি মিডিয়া’ হল সেই সব মিডিয়া যারা মোদিজির কোলে দোল খায়, মোদি ভজনা করে। সংবাদমাধ্যম গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সেই স্তম্ভ হারিয়ে ফেলছে তার স্বতন্ত্রতা। গণতন্ত্রের নাম নিয়ে মোদিজি ও তাঁর দল প্রতিনিয়ত গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে চেলেছেন। এ এক নতুন কায়দা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct