হাবা ছেলের কাণ্ড
আব্দুল মুকিত মুখতার
সোনার চামচ মুখে নিয়ে
জন্মে ছিলাম আমি
সবার কাছে যেমন তেমন
মায়ের কাছে দামী।
সাদাসিধে ভাবতো বাবায়
ভাইদের কাছে বোকা
চালাক চতুন ছিলাম না তবু
মায়ের আমি খোকা।
একটু বড়ো হলাম যখন
কথা বলি থুত্থুড়ে
সবাই ভাবে হ্যান্ডিক্যাপ
রাখে দূরে দূরে।
মা বাবা তো বিষম চিন্তায়
হায়রে মোদের সোনাধন
কী করিবে কঠিন ধরায়
জীবন করবে যাপন।
প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হলাম
হতে পারিনি স্থায়ী
শিক্ষকরা কয় প্রতিবন্ধী
হতে চায় না দায়ী।
চিন্তা করে বাবায় বসে
মায়ের চোখে অশ্রম্ন
মাদরাসাতে পাঠিয়ে দিল
বানাতে দ্বীনের খসরু।
থাকতে হলো এতিমখানায়
সবকিছুতে ভিন্নতা
রুটিন মাফিক জীবন আমার
কাটলো কন্ঠের জড়তা।
ভাইয়েরা সব বড়ো হলো
ডিগ্রি করলো হাসিল
চাকুরি নিয়ে ছাড়িয়ে দিল
সোনার দেশের পাঁচিল।
এক ভাই থাকে জার্মানীতে
আরেক থাকে জেনেভায়
সেজো ভাইয়া রাজনীতিতে
তর্জনী বীর ইশারায়।
মা বাবার তো বৃদ্ধ বয়স
একা থাকে বাড়িতে
কারো হাতে সময় নাই
ভরণ পোষণ করিতে।
ভেঙ্গে পড়লো আসমান আমার
মাথায় পড়লো বাজ
পিতা মাতার করুণ দশায়
কী করিব আজ।
জমি জমা সব বিক্রি গেছে
ঘুষ প্রদানের চাকুরী পেতে
বৃদ্ধ বয়সে বাবা মারও
শরীরটা গেছে তেতে।
ভাইগণ আমার মস্ত মানুষ
চাকুরি করে জব্বর
তাদের সমানে ব্যর্থ আমি
ছিল না কোনো নম্বর।
মাতা পিতার এ হালত্ দেখে
মাথাটা গেল ঘুরে
ভাইদের কিছু নসিহত করলাম
মধুর মুলায়েম সুরে।
পিতা মাতার পায়ের নিচে
রয়েছে স্বর্গ নরক
এই দুনিয়াটা মিথ্যারে ভাই
সত্যের করো পরখ।
তোমার ছেলেরা তাই করিবে
তুমি করছো যাহা
আল্লাহর বিচার সূক্ষ্ম নিপুণ
ভুলে যেও না তাহা।
আমার কথায় কাঁদলো সবাই
কাঁদলেন মা ও বাবা
বুলিং করে কেউ কাহারে
ডেকো না কভূ হাবা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct