আপনজন ডেস্ক: গত মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট এক নির্দেশ দিয়েছিল ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকীকে নিরাপ্ত্তা দেওয়ার জন্য। অবশেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে বিশেষ নিরাপত্তা পেলেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় হুগলির ফুরফুরা শরিফের বাড়ি পরিদর্শনে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকরা। তারপর রবিবার বিকেল চারটের সময় তার বাড়িতে এসে পৌঁছয় সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ)-এর সাত সদস্যের নিরাপত্তা বাহিনী। মধ্যে পাঁচ জন সশস্ত্র জওয়ান মোতায়েন থাকবে তার নিরাপত্তায়। এই নিরাপত্তা বাহিনী এদিন নওশাদ সিদ্দিকীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে পরিচিত হন। তারপর তার বাড়ি ও চারপাশ ঘুৃরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খতিয়ে দেখেন। উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে তৃণমূল ও আইএসএফের সংঘর্ষের পর নওশাদ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছিলেন। আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি খুন হয়ে যেতে পারেন। সেই অনুযায়ী তিনি রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইলেও মেলেনি। কলকাতা হাইকোর্টের শরণাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে নিরাপত্তা মিলল। এ বিষয়ে নওশাদ সিদ্দিকী জানানম, সিআইএসএফ-এর সাতজনের একটা দল আমার বাড়িতে এসে নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করে। কোন ক্যাটাগরির নিরাপত্তা চূড়ান্ত করা হচ্ছে সে বিষয় এখনো স্পষ্ট হয়নি। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা শুনানি আছে, হয়তো সেখানে বিস্তারিত জানতে পারব।
নির্দেশ দেওয়া হয়। চাইলেও তাকে উপযুক্ত নিরাপত্তা রাজ্যের তৃণমূল সরকার দেয়নি। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে হাজারো কথা বললেও কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি। উলটে, বিজেপি নেতাদের কথামতো রাতারাতি গেরুয়া শিবিরের বি, সি, ডি ক্যাটাগরির নেতাদের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে মোদী সরকার। এই পরিস্থিতিতে তাঁর নিরাপত্তার সমস্যা বাড়তে শুরু করে বলেই নওশাদ জানিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস খোলা মনে আইএসএফকে গ্রহণ করেনি। সংখ্যালঘুদের যে সমর্থন তৃণমূল এতদিন একচেটিয়া পাচ্ছিল, আইএসএফ তৈরি হওয়ায়, তাতে বিরাট বিভাজন তৈরি হয়। রাজ্যের সংখ্যালঘুদের এক বিরাট অংশের সমর্থন চলে যায় আইএসএফের দিকে। আর, তাতেই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন এলাকায় আইএসএফ কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন আইএসএফ সমর্থক খুনও হন রাজ্যের নানা জায়গায়। সাম্প্রতিক সময়ে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে আক্রান্ত হন আইএসএফ নেতা-কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে আইএসএফ নেতা-কর্মীদের ভরসার পাত্র হয়ে ওঠা নওশাদ দলের কর্মী-সমর্থকদের কথা ভেবেই নিরাপত্তার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। যার জেরে হাইকোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে নওশাদের নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল। সেইমতো সাত জওয়ানের বাহিনী রবিবার নওশাদের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct