আপনজন ডেস্ক: কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সোমবার মধ্যপ্রদেশে দলের প্রচার শুরু করেছেন, যেখানে এই বছরের শেষের দিকে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের সঙ্গে ভোট হবে রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও তেলেঙ্গানায়। সময়ক্ষেপণ না করে কংগ্রেস সবার আগে মধ্যপ্রদেশে প্রচার শুরু করে দিল। মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে এক এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘এই সরকার কীভাবে চলছে, তার স্বরূপ উদ্ঘাটন করে আপনাদের চোখ খুলে দিতে এখানে এসেছি। এটুকু বোঝাতে এসেছি, এতগুলো বছর যাদের বিশ্বাস করে দায়িত্ব সঁপেছেন, তারা অবহেলা ও দুর্দশা ছাড়া আর কিছু উপহার দেয়নি।’ জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রিয়াঙ্কা ভোটারদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন: পুরানো পেনশন স্কিম, ১০০ ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ এবং ২০০ ইউনিট পর্যন্ত অর্ধেক দাম, মহিলাদের জন্য প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা এবং এলপিজি সিলিন্ডার ৫০০ টাকা। তিনি আরও বলেন যে ২০১৮ সালে শুরু হওয়া কৃষি ঋণ মকুব সম্পন্ন হবে। কংগ্রেস ২০১৮ সালের নির্বাচনে একক বৃহত্তম দল হিসাবে আবির্ভূত হয়েছিল এবং রাজ্য সরকার গঠন করেছিল, তবে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার নেতৃত্বে বিদ্রোহের পরে ক্ষমতা হারিয়েছিল, যিনি ২০২০ সালে ২০ জনেরও বেশি বিধায়কের সাথে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বে বিজেপি সরকার শপথ নেয়।কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করার সময় প্রিয়াঙ্কা বলেন, দল এই গ্যারান্টিগুলি ১০০ শতাংশ বাস্তবায়ন করবে। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, এটি আপনার কাছে আমার প্রতিশ্রুতি। তিনি ভোটারদের অন্যান্য রাজ্যে দলের রেকর্ড দেখার আহ্বান জানান। কর্ণাটকে আমরা পাঁচটি গ্যারান্টি দিয়েছি, সবগুলোই মন্ত্রিসভায় পাস হয়েছে। রাজস্থানে ওল্ড পেনশন স্কিম চালু রয়েছে। সব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ছত্তিশগড়ে কৃষকরা তাদের ফসলের সর্বোচ্চ দাম পাচ্ছেন। হিমাচল প্রদেশেও আমরা (আমাদের প্রতিশ্রুতি) বাস্তবায়ন করছি।
এদিন প্রিয়াঙ্কার রাজ্য সফরের সময়, জবলপুরের সমাবেশের আগে নর্মদা নদীর তীরে গোয়ারিঘাটে পুজো করেন প্রিয়াঙ্কা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ এবং দলের আরও কয়েকজন নেতা। পরে সমাবেশে কমলনাথ বলেন, “প্রিয়াঙ্কাজি আমাকে বলেছিলেন যে আমি নর্মদাজির পূজার পরে প্রচার শুরু করব। ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রী থাকা শিবরাজ সিং চৌহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির অভিযোগ তুলে সর্বাত্মক আক্রমণ করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।তিনি বলেন, ‘২২০ মাসের শাসনে ২২৫টি দুর্নীতি হয়েছে। “প্রতি মাসে প্রায় একটি দুর্নীতির কেলেঙ্কারি। আপনি কি ভেবে দেখেছেন এটি আপনার জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করে? দুর্নীতির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে জনগণের ওপর। কারণ জনসাধারণের কাছ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়।তিনি আরো বলেন তারা ১৮ বছর ধরে সরকারে আছে। যখন কেউ এত দিন সরকারে থাকে, তখন অলসতা আসে। তিনি (চৌহান) মনে করেন যে তিনি সরকার ছাড়বেন না। এটা তাদের আচরণে স্পষ্ট”। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী মধ্যপ্রদেশের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানকে “ঘোষনাবীর” হিসাবে উল্লেখ করেন, যার অর্থ তিনি ফাঁকা ঘোষণা করেন কাজের কাজ কিছুই করেন না। তিনি বলেন, ‘আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী ‘ঘোষনাবীর’। গত ১৮ বছরে তারা ২২ হাজার ঘোষণা দিয়েছে। সমস্ত ঘোষণার মধ্যে সম্ভবত ১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।২০২৩ সালের কর্ণাটকের নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্যের কথা উল্লেখ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, বিজেপির “ দুর্নীতি কেলেঙ্কারির তালিকা প্রধানমন্ত্রীর অপমানের তালিকার চেয়ে দীর্ঘ”। এদিন জনসমক্ষে সিন্ধিয়ার নাম উল্লেখ না করেই তাঁর সমালোচনা করেন প্রিয়াঙ্কা, যিনি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী। প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘এটা আমার জন্য দুঃখজনক যে মধ্যপ্রদেশ থেকে আমাদের কয়েকজন নেতা ক্ষমতার জন্য দল ছেড়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct