আপনজন ডেস্ক: কোলেস্টেরল শুনলেই মাথায় আসে নেতিবাচক চিন্তা। অথচ আপনার শরীরের জন্যই এটা প্রয়োজন। যেমন হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল। ঝামেলা বাঁধে যখন লোডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হয়। এটাকে বলাই হয় ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল। জেনে নিন, এটা বেড়ে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে, কীভাবে তা বুঝতে পারবেন এবং তখন কী করবেন।
হতে পারে পিএডি : রক্তে এলডিএল বেড়ে গেলে তা রক্তনালির দেয়ালে জমা হতে থাকে। এর ফলে তা সরু হয়ে যায় এবং হাতে-পায়ে রক্ত চলাচল কমে যায়, বিশেষ করে পায়ে। একটু হাঁটলেই পা ব্যথা করতে থাকে। এটাকে বলে পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিস, সংক্ষেপে পিএডি। চিকিৎসা না করালে পিএডি জটিল আকার ধারণ করতে পারে। পায়ে রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি হতে পারে। একটা সময় এমন হয় যে খালি চোখেই বোঝা যায়, পা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যায়, হাঁটলে ভীষণ ব্যথা হয়। আবার কয়েক মিনিট বিশ্রামেই ব্যথা কমে আসে।
ত্বকেও সমস্যা : এলডিএল অতিরিক্ত বেড়ে গেলে তার প্রভাব ত্বকেও পড়বে। সেগুলো জমে জমে র্যাশের মতো উঠবে। হলদে বা কমলাটে গোটার মতো। ত্বকের এই সমস্যা হতে পারে অনেক জায়গাতেই। চোখের কোণে, হাতের রেখায় বা পায়ের পেছনে।
অকেজো রক্তনালি : কোলেস্টেরলের সঙ্গে চর্বি ও অন্যান্য উপাদান মিলে জমতে থাকে রক্তনালির দেয়ালে। এর পরিমাণ বাড়তে বাড়তে একসময় সে নালি দিয়ে রক্ত চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে পুরোপুরি।
নখের মৃত্যু : রক্তনালি মূলত শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত পরিবহন করে। কোনো নালি যখন অকেজো হতে থাকে, তার সঙ্গে যুক্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গটিও ঠিকমতো রক্ত পায় না। নখে যখন ঠিকমতো রক্ত যায় না, তা খালি চোখেই বোঝা যায়। নখটা কালো হতে থাকে।
চোখে হলুদ স্তর : অতিরিক্ত এলডিএল জমতে পারে চোখের চারপাশেও। চোখের পাতার ওপরে বা নিচে। হলুদ রঙের পুরু হয়ে ফুলে থাকে। একে বলে জ্যানথেলাসমা। অবশ্য ডায়াবেটিস বা থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও এমনটা হতে পারে।
প্রাণনাশের ঝুঁকি : তবে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হৃদ্রোগের। তাতে এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। আবার তা জমতে পারে মস্তিষ্কের সঙ্গে যুক্ত রক্তনালিতেও। তখন মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমে যাবে। এমনকি বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এর ফলে হতে পারে স্ট্রোক।
বাঁচতে হলে : নজর দিন আপনার জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ও ব্যায়াম করুন। উচ্চমাত্রার চর্বিযুক্ত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। বয়সের সঙ্গে এ–সংক্রান্ত জটিলতার আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। তাই সময়ের সঙ্গে এ দুইয়ের কড়াকাড়ি বাড়াতে থাকুন।
তবুও সচেতন থাকুন : উচ্চ কোলেস্টেরলকে বলা হয় ‘নীরব ঘাতক’। কারণ, এ–সংক্রান্ত জটিলতার লক্ষণগুলো ধরাই মুশকিল। বুঝলেও তা সাধারণ অসুস্থতা বলেই মনে হয়। তাই ঝুঁকি না নিয়ে নিয়মিত কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করুন। গড়বড় দেখলেই ডাক্তারের শরণ নিন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct