আপনজন ডেস্ক: নরওয়ের উপকূলে বেরেন্টস সাগরের তলায় খোঁজ মিলল এক আগ্নেয়গিরির। সম্প্রতি দ্য আর্কটিক ইউনিভার্সিটি অব নরওয়ের (ইউআইটি) বিজ্ঞানীরা এর খোঁজ পান। বিশেষ জলযান আরওভি অরোরার সাহায্যে একটি অনুসন্ধানকারী জাহাজ ক্রনপ্রিন্স হাকন এর হদিশ পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়, নরওয়ের জলসীমার মধ্যে আবিষ্কৃত দ্বিতীয় কাদা উদগীরণকারী আগ্নেয়গিরি এটি। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে মাড ভলক্যানো বলা হয়। বিয়ার দ্বীপ থেকে ৭০ নটিক্যাল মাইল (এক নটিক্যাল মাইল মানে ১.৮৫ কিলোমিটার) দক্ষিণে এবং জলের ৪০০ মিটার গভীরে অবস্থিত এই আগ্নেয়গিরি। সমুদ্রের তলায় মিথেন গ্যাস কীভাবে কাজ করে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতেই বিজ্ঞানীরা শুরু করেছিলেন গবেষণা। এই মিথেন একটি গ্রিনহাউস গ্যাস। দিন দিন পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার জন্য মিথেন অনেকটা দায়ী। তার খোঁজে বেরিয়েই খোঁজ মেলে এই নয়া আগ্নেয়গিরির। মিথেন অনুসন্ধান প্রকল্পের প্রধান তদন্তকারী ও অধ্যাপক গিউলিয়ানা পানেরি সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘বাস্তব সময়ে দাঁড়িয়ে জলের নিচে এমন কাদার বিস্ফোরণ দেখলে বোঝা যায়, এই গ্রহের নিচটা এখনও জীবন্ত!’ নয়া আবিষ্কৃত ওই আগ্নেয়গিরির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দ্য বোরিয়ালিস মাড’। সব মিলিয়ে ৩০০ মিটার চওড়া এবং ২৫ মিটার গভীর একটি গর্তের ভিতরে রয়েছে এই আগ্নেয়গিরি। তবে এমন এক গর্তের ভিতরে কেন আগ্নেয়গিরি? তার সম্ভাব্য কারণও জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষকদের মতে, সম্ভবত কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলেই এমন গর্ত হয়। প্রায় ১৮ হাজার বছর আগে গ্লেসিয়ার পর্ব শেষ হওয়ার ঠিক পরেই এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটেছিল। আর্কটিক ইউনিভার্সিটি অব নরওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগ্নেয়গিরিটি লম্বায় ৭ মিটার এবং চওড়ায় ২.৫ মিটার। তবে বেরেন্টস সাগরের নিচে এমন আরও আগ্নেয়গিরি রয়েছে বলেই সন্দেহ অধ্যাপক পানেরির। তার কথায়, দলগত প্রচেষ্টার ফলে এই আগ্নেয়গিরির খোঁজ পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীদের কথায়, এই ধরনের আগ্নেয়গিরি থেকে প্রাচীন পৃথিবীর ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। ফলে আগামী দিনের এই আগ্নেয়গিরি নিয়ে গবেষণা হলে আরো নতুন তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct