সুরাইয়া সুলতানা, হিঙ্গলগঞ্জ, আপনজন: রাজ্যে শাসকদলের নেতা-কর্মীরা যখন একাধিক দুর্নীতিতে বিদ্ধ তখন সুন্দরবনে উল্টো ছবি। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের প্রত্যন্ত সুন্দরবনের রুপমারি গ্রাম পঞ্চায়েত বছর ৫২ এর সনাতন সর্দার। ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী তথা দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত। কখনো অঞ্চল সভাপতি আবার কখনো হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দায়িত্ব সামলিয়েছেন সততার সঙ্গে। এলাকায় সনাতন মানেই দিবারাত্র পরিষেবা পাবে মানুষ এমনটাই বলছেন গ্রামবাসীরা। আয়লা, আমফান ও ইয়াসের মতো বিপদেও ছুটে গিয়েছেন এলাকার মানুষের জন্য। কিন্তু তার নিজের কয়েক কাটা ফসলের জমি নিয়ে তার নিজস্ব সম্পত্তি। স্ত্রী সুমিত্রা সর্দার, বছর ১২ এর মেয়ে ও ৭ বছরের ছেলেকে নিয়ে চারজনের পরিবার। তাঁর স্ত্রী এখনও কাঠের জালে রান্না করেন প্রতিদিনকার মতো। নিজের অল্প জমি সকাল হতেই দেখা যায় গামছা হাতে লাঙ্গল ও গরু নিয়ে অন্যের জমিতে গিয়ে কাজ করেন। পাশাপাশি নিজের জমিতে কিছু সব্জি ফসল তৈরি করেন। পঞ্চায়েতের নির্ধারিত টাইম হলে সাড়ে দশটায় তিনি গিয়ে পঞ্চায়েতে মানুষের পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। এভাবেই দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তিনি মানুষের সনাতন হয়ে বেঁচে রয়েছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে তিনি ভগবান ও সৎ ব্যক্তি। যে কোন বিপর্যয় যেকোনো শংসাপত্র থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প সুবিধা নিয়ে মানুষের দুয়ারে হাজির হন। যেখানে শাসক দল একাধিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। ঠিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তখন এই ছবি আরো একেবারে প্রত্যন্ত সুন্দরবনের মানুষের কাছে সনাতন হয়ে উঠেছে সততার মূর্ত প্রতীক। সনাতন বাবু জানালেন, “আমি পদে থাকি আর না থাকি আদর্শ মেনে মানুষের কাজ করে যাব এটাই আমার মূল মন্ত্র। একদিকে জীবিকা নির্ভর করবো, অন্যদিকে মানুষের পরিষেবা দিয়ে যাব।পঞ্চায়েত নির্বাচেনর দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গেছে। যদিও, এবারেও সনাতনবাবু দলের প্রার্থী হবেন কিনা তা ঠিক হয়নি। তবে, তিনি পুনরায প্রার্থী হযে জিতে প্রধান হলেও এই জীবন জীবিকার যুদ্ধ চলতে থাকবে বলে সনাতনবাবু জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct