আপনজন ডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়ে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম’ তকমা পেলেন মুর্শিদাবাদ থেকে যাওয়া প্রায় ২০জন পরিযায়ী শ্রমিককে। মূলত বজরং দলের কর্মীরা ওই সমস্ত শ্রমিকদের ‘রোহিঙ্গা মুসলিম’ সন্দেহ করে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোয় বিষয়টি নিয়ে শোরগোল হয়। যদিও থানার আধিকারিকদের কাছে প্রামাণ্য হিসেবে আধার কার্ডের জেরক্স তুলে ধরায় তাতে স্পষ্ট হয়ে যায় তারা ‘বাংলাদেশি রোহিঙ্গা মুসলিম’ নয়, এ দেশের পশ্চিমবঙ্গেরই বাসিন্দা। তারপরই তারা হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। জানা গেছে, ইন্দোর পৌর নিগমের নিকাশি নালা তৈরির কাজ চলছিল ছোট বাঙ্গারদা এলাকায়। এই কাজের জন্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিযায়ী রাজমিস্ত্রী শ্রমিকদের নিয়ে আসেন স্থানীয় এক ঠিকাদার। কাছাকাছি থাকলে কাজের সুবিধা হবে এই ভেবে ওই ঠিকাদার এই বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করেন শ্মশান চত্বরে। কিন্তু শ্মশানে থাকা ওই ২০জন মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলা ভাষায় কথা বলতে দেখে বাংলাদেশি ‘রোহিঙ্গা মুসলিম’ বলে সন্দেহ করেন বজরং দলের স্থানীয় নেতারা। বজরং দলের স্থানীয় আহ্বায়ক তন্নু শর্মা বলেন, সংগঠনের কর্মীরা স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন। তারা জানতে পেরেছিল ১৫ থেকে ২০ জন “অসামাজিক ব্যক্তি” গত কয়েক দিন ধরে ছোট বাঙ্গারদার শ্মশান কমপ্লেক্সে অবস্থান করছে। তারা সন্দেহ করেছিল যে তারা “রোহিঙ্গা মুসলিম” এবং পুলিশকে না জানিয়ে “গোপনে” শ্মশানে অবস্থান করেছিল। তাই তিনি পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে দাবি করেন এই ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিস্তারিত তদন্ত করা উচিত। মঙ্গলবার রাতে তাঁদের স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরোড্রোম থানার ইনচার্জ কল্পনা চৌহান জানান, কয়েকটি সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে ছোট বাঙ্গারদা এলাকার একটি মুক্তিধামের কাছে থেকে প্রায় ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিককে থানায় আনা হয়। তাদের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করা হয় এবং আধার কার্ডের ফটোকপি নেওয়া হয়। তারা মূলত পশ্চিমবঙ্গের শ্রমিক বলে প্রমাণিত হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে তাদের থানা ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এরোড্রোম থানা সূত্র জানিয়েছে, ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের আধার কার্ড দেখে জানা গেছে তারা পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। তবে, মুর্শিদাবাদের ঠিক কোন থানার অন্তর্গত কিংবা কোন গ্রামে তা জানাননি। তবে, এরোড্রম থানার ইনচার্জ কল্পনা চৌহান জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছ থেকে আপত্তিকর কিছু পায়নি পুলিশ। তাদেরকে ছেড়ে েদওয়ার পর ঠিকাদার ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct