আপনজন ডেস্ক: অনেকেই আছেন, কাজের চাপে বা অবহেলা করে দীর্ঘক্ষণ ধরে প্রস্রাব আটকে রাখেন। কিন্তু এটা যে শরীরের জন্য অতি ক্ষতিকর সেটা কি আপনি জানেন? একজন সুস্থ পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে মূত্রাশয়ে ২০০ মিলিলিটার পরিমাণ মূত্র জমা হলেই মূত্র ত্যাগের প্রয়োজন অনুভূত হয়। সুস্থ অবস্থায় মূত্রাশয় ৩৫০ থেকে ৫৫০ মিলিলিটার মূত্র ধরে রাখতে সক্ষম। দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব ধরে রাখা শরীরের পক্ষে মোটেই ভালো নয়। দীর্ঘদিন এভাবে প্রস্রাব ধরে রাখলে দেখা দিতে পারে একাধিক সমস্যা।
চলুন জেনে নিই এতে কী কী সমস্যা হতে পারে-
(১) দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখলে শ্রোণিতল বা পেলভিক ফ্লোরের পেশি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে প্রস্রাব ধরে রাখতে অসুবিধা দেখা দেবে। এমনকি হাঁচি বা কাশির সময় নিজের অজান্তেই কিছুটা প্রস্রাব বার হয়ে যেতে পারে। দেখা দেয় বারবার মূত্রত্যাগের প্রবণতাও।
(২) মূত্রের কাজ হলো দূষিত বর্জ্য পদার্থকে দেহের বাইরে বার করে দেওয়া। দীর্ঘ ক্ষণ মূত্রত্যাগ না করার অভ্যাস থাকলে এই ধরনের বর্জ্য পদার্থ দেহের ভেতরেই জমে যেতে পারে। কিডনির ভেতরে যখন বর্জ্য পদার্থ জমে কঠিন হয়ে যায় তখনই তাকে কিডনির পাথর বলা হয়। কিডনিতে পাথর তৈরি হলে তা থেকে ব্যথা, সংক্রমণ কিংবা রক্তপাতের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাথরগুলো খুব বড় হয়ে গেলে অপসারণের জন্য প্রয়োজন হতে পারে অস্ত্রোপচারেরও।
(৩) দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রাশয় প্রসারিত ও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। সাধারণত যখন মূত্রাশয় পূর্ণ থাকে তখন এটি প্রসারিত হয় এবং মূত্র ত্যাগ করলে আগের আকারে ফিরে আসে। ক্রমাগত প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রাশয় আর নিজের আকারে ফিরতে পারে না।
(৪) দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্রাব আটকে রাখলে মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক। মূত্রনালীতে উপস্থিত কিছু ব্যাক্টেরিয়া প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। কিন্তু যখন দীর্ঘ সময় মূত্রথলিতে প্রস্রাব আটকে থাকে তখন ব্যাক্টেরিয়ার দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটতে পারে।
(৫) বিরল হলেও দীর্ঘ ক্ষণ মূত্র ধরে রাখলে মূত্রাশয় ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদি এমন ঘটনা ঘটে তবে দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। কাজেই কিডনি ভালো রাখতে যেমন পর্যাপ্ত জল পান করা জরুরি তেমনই প্রয়োজন সময় মতো মূত্র ত্যাগ করাও।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct