অমরজিৎ সিংহ রায়, বালুরঘাট, আপনজন: উচ্চমাধ্যমিকে এবারে প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চার জন। বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্রেয়া মল্লিক ও অনুসূয়া সাহা যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থান, ডাঙ্গারহাট উচ্চ বিদ্যালয় এর ছাত্রী সৃজিতা বসাক চতুর্থ ও বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র সপ্তক দাস অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে চার জন মেধা তালিকায় স্থান অধিকার করায় খুশির হাওয়া জেলায়। জানা গিয়েছে, বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় এর ছাত্রী শ্রেয়া মল্লিক ৪৯৪ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় হয়েছে। তার বাড়ি বালুরঘাট চক ভবানী এলাকায়। শ্রেয়া জানিয়েছে, সে ভাল ফলের আশা করেছিল ঠিকই, কিন্তু তৃতীয় হবে তা ভাবেনি । সব বিষয়েই তাঁর শিক্ষক ছিল । ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়তে চায় শ্রেয়া । তাঁর বাবা কোর্টের মুহুরির কাজ করেন ।এদিকে, ৪৯৪ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে (রাজ্যে চার জন) জেলায় তৃতীয় স্থান আধিকার করছে অনুসূয়া সাহা । বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুসূয়ার বাড়ি হিলি ব্লকের ভারত- বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বাবুপাড়া এলাকায়। অনুসূয়ার বাবা অজয় সাহা ডাক বিভাগে কর্মরত। মা ইতি সাহা আশাকর্মী। বড় হয়ে শিক্ষকতা করার ইচ্ছে রয়েছে অনুসূয়ার।অপরদিকে, বালুরঘাট শহরের রথ তলা এলাকার বাসিন্দা, বালুরঘাট হাই স্কুলের ছাত্র সপ্তক দাস ৪৮৯ পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। সপ্তকের বাবা ও মা দুজনেই ডাক বিভাগের কর্মচারী। পড়াশোনা ছাড়া গল্পের বই পড়া এবং গান শুনতে পছন্দ করে সে।
অন্যদিকে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ডাঙ্গারহাট হাইস্কুলের ছাত্রী শ্রীজিতা বসাক রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে । সৃজীতার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৩। তার বাড়ি কুমারগঞ্জ ব্লকের অন্তর্গত ডাঙ্গারহাটের আগাছা এলাকায়। শ্রীজিতা দিনে ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করতো। তার একটি মাত্র টিউশন ছিল। আলাদাভাবে কোনও কোচিং কিংবা বিষয়ভিত্তিক টিউশন ছিলনা তার। সৃজিতা জানায়, ‘আমি ভূগোল নিয়ে পড়াশোনা করতে চাই। আর ভবিষ্যতে আমি সমাজকর্মী হতে চাই।’ তার বাবা সুজিত বসাক পেশায় টোটো চালক। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। সৃজিতার বিষয় ভিওিক নম্বর গুলি হল বাংলা-৯৭, ইংরেজী-৬৪, ভূগোল-১০০, দর্শন-৯৯, কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন-৯৭, শিক্ষাবিজ্ঞান-১০০।এ প্রসঙ্গে ডাঙ্গারহাট উচ্চ বিদ্যালয় এর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল মন্ডল জানান, ‘প্রত্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকার স্কুলের এই ছাত্রীর সাফল্যে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে শুধু নয়, একজন স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবেও আমি গর্বিত। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা এই কৃতি ছাত্রী আগামীতে পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রে কোন রকম আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হলে, আমরা বিদ্যালয়ের তরফে সর্বতোভাবে তার পাশে থাকার চেষ্টা করব।’উল্লেখ্য, বুধবার উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হতেই কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সংবর্ধনা দেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকেরা। জেলা শিক্ষা দপ্তরের তরফে বালুরঘাট সদর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক পিংকু সরকার, কুমারগঞ্জ উত্তর চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশীষ তামাং কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা পএ তুলে দেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct