আপনজন ডেস্ক: বৃহস্পতিবার কর্নাটকের নব নির্বচিত মুখ্যমন্ত্রী এবং উপ-মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং ডি কে শিবকুমার উভয়ই রাজ্যের জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। কংগ্রেস বৃহস্পতিবার কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সিদ্দারামাইয়া এবং শীঘ্রই গঠিত মন্ত্রিসভায় তার একমাত্র সহকারী উপ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ডি কে শিবকুমারের নাম ঘোষণা করেছে। সিদ্দারামাইয়া ঐক্যের ছবি সহ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, আমাদের হাত সবসময় কান্নাডিগাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য একত্রিত হবে। কংগ্রেস পার্টি একটি পরিবার হিসাবে কাজ করবে জনস্বার্থে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত শাসন এবং আমাদের সমস্ত প্রতিশ্রুতি আমরা পূরণ করব। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে একতা প্রদর্শনে সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমারের হাত একসাথে তুলে ধরেন৷ শিবকুমার, যিনি রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতিও, একই ছবি টুইট করে বলেছেন, “কর্নাটকের নিরাপদ ভবিষ্যত এবং আমাদের জনগণের কল্যাণ আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং আমরা সেই গ্যারান্টিতে ঐক্যবদ্ধ। ”
মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য প্রতিযোগিতায় থাকা এই দুই নেতা ২০ মে অন্যান্য মন্ত্রীদের সাথে শপথ নেবেন। কর্নাটকে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অচলাবস্থা ভাঙতে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলেছে, এবং সেখানে সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার উভয়ই শীর্ষস্থানীয় কর্তাদের সামনে তাদের বিষয় গুলি উপস্থাপন করেছেন। ২২৪ সদস্যের বিধানসভার ১০ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে, কংগ্রেস ১৩৬টি আসন পেয়ে দৃঢ় বিজয় অর্জন করেছে, যেখানে ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার নেতৃত্বাধীন জে ডি এস যথাক্রমে ৬৬ ও ১৯টি আসন পেয়েছে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্নাটকে কংগ্রেসের ক্ষমতায় ফিরে আসা সারা দেশে রাজনৈতিক পটভূমিতে একটা বড় পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে এসেছে। কর্নাটকের জয় বিরোধী ঐক্যের শক্তি প্রদর্শনের একটা পথ তৈরি করে দিয়েছে। আর এই বিরোধী ঐক্যের মঞ্চ হিসাবে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানকে বেছে নেওয়া হয়েছে একপ্রকার বলা যেতে পারে। কংগ্রেসের তরফে সিদ্দারামাইয়ার শপথগ্রহণে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আমন্ত্রিত তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন, তেলেঙ্গানার কে চন্দ্রশেখর রাও এবং বিহারের নীতীশ কুমার। কর্নাটকে কংগ্রেস জয়ী হওয়ার পর বিজেপিকে হারানোর জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু টুইটে বা সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেসের নাম মুখে আনেননি। এমনকী সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফলের পর মমতা চব্বিশে একলা লড়াইয়ের কথা বললেও, কর্নাটকে কংগ্রেসের বিজয়ের পর মমতার মুখে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবার্তা শোনা যায়। যেখানে যে শক্তিশালী সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে সেই দল লড়াই করবে বলে জোটের আহ্বান দিয়েছেন মমতা। যদিও মমতার এই জোটবার্তার পর বাংলায় কংগ্রেসের নেতৃত্ব তৃণমূলের সমালোচনায় মুখর হয়। দেশে ৫৪৩টির মধ্যে ২০০টি আসনে কংগ্রেস লড়ুক, মমতার এই বার্তায় নারাজ ছিলেন অধীর-প্রদীপরা। কিন্তু হাইকম্যান্ডের অবশ্য অন্য পরিকল্পনা রয়েছে। মমতাকে সিদ্দারামাইয়ার শপথ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে জোট সম্ভাবনা জিইয়ে রাখার বার্তা দিল কংগ্রেস, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। কর্নাটকের নব নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার শপথে হাজির থাকবেন সোনিয়া গান্ধী রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী-সহ ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল, রাজস্থানের অশোক গেহলট, হিমাচলের সুখবিন্দর সিং সুখু, ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন, সমাজাবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব, ন্যাশনাল কনাফারেন্স প্রধান ফারুক আবদুল্লা এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকরা। যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একাধিক নেতা নেত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঠিকই কিন্তু ওই দিন কতজন আসলেই উপস্থিত থাকবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct