আপনজন ডেস্ক: জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১১ রান দরকার ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের। লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস ক্রুনাল পাণ্ডিয়া শেষ ওভারে বল তুলে দেন মহসিন খানের হাতে। বাঁহাতি এ পেসার অধিনায়কের আস্থার দারুণ প্রতিদান দিয়েছেন মাত্র ৫ রান দিয়ে। তাতে ৫ রানের দুর্দান্ত জয় তুলে নেয় লক্ষ্ণৌ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাওয়া জয়টাকে বাবাকে উৎসর্গ করেছেন ২৪ বছর বয়সী পেসার মহসিন। বাবার প্রতি ভালোবাসা সব সন্তানেরই থাকে। তবে মহসিনের বাবার প্রতি ভালোবাসা কাল রাতে ম্যাচের পর প্রকাশ্যে আসার আলাদা কারণ আছে। মুম্বাইয়ের মুখোমুখি হওয়ার এক দিন আগেও মহসিনের বাবা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ছিলেন। জয়ের পর সংবাদমাধ্যমকে সে কথা নিজেই জানিয়েছেন লক্ষ্ণৌয়ের পেসার, ‘দুঃখজনকভাবে আমার বাবা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন। গতকাল তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। এই ম্যাচটা আমি তাঁর জন্য খেলেছি। ’গত ১২ মাস মোটেও ভালো যায়নি মহসিনের। গত বছর আইপিএলে অভিষেক মৌসুমে ৫.৯৭ ইকোনমি রেটে ১৪ উইকেট নেওয়া মহসিন কাঁধে মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন। তাতে এক বছর ধরে কোনো প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে খেলতে পারেননি। এ বছর আইপিএলের প্রথমভাগে পুরো ফিটও ছিলেন না। মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এ মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো বোলিং করেছেন। এর আগে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ৪২ রানে ১ উইকেট নেন। কাল ২৬ রানে নেন ১ উইকেট। কাঁধে চোট পেয়ে মাঠের বাইরে থাকার সেই সময়ে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন মহসিন। সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটা খুব কঠিন সময় ছিল। একপর্যায়ে আমি ক্রিকেট খেলাই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। বোলিং বাদ দিন, হাতই তো তুলতে পারিনি। হাত সোজা করতে পারছিলাম না। ফিজিও সাহায্য করেছেন। বিষয়টি ভয়ের ছিল। কারণ, চিকিৎসক বলেছিলেন, আর এক মাস দেরি করলেই হাতটা কেটে ফেলতে হতো। আমি চাই না কোনো ক্রিকেটার এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাক। আমার ধমনি ও স্নায়ু ব্লক হয়ে গিয়েছিল। ’মুম্বাইয়ের বিপক্ষে নিজের প্রথম দুই ওভারে ২১ রানে নেহাল ওয়াধেরার উইকেট নেন মহসিন। শেষ ওভারে অধিনায়ক তাঁর ওপর ভরসা রেখেছেন। স্লোয়ার ও ইয়র্কারের মিশেল করা দারুণ এক ওভারে জয় তুলে নিয়ে লক্ষ্ণৌকে পয়েন্ট টেবিলের তিনে তুলেছেন মহসিন। শেষ ওভারের আগে অধিনায়কের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, সেসবও জানিয়েছেন এই ক্রিকেটার, ‘অনুশীলনে যা করি, সেটাই করার চেষ্টা করেছি। এটাই আমার শক্তির জায়গা। ক্রুনাল ভাই (অধিনায়ক) জিজ্ঞাসা করলেন, কীভাবে বোলিং করব? বললাম, যা করে এসেছি, সেটাই করব। স্কোরবোর্ডে না তাকিয়ে নিজেকে শান্ত রেখে ৬টি ভালো বল করার চেষ্টা করেছি। ’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct