আপনজন ডেস্ক: নবান্নে ফের সারপ্রাইজ ভিজিট করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীরা অফিসে এসেছেন কি না, কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, বুধবার আচমকা পরিদর্শন করে খোঁজ নিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। বুধবার দুপুর ১২টা ১৫ নাগাদ আচমকা নবান্নে ভূমি সংস্কার ও অর্থদফতরে হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার আচমকা পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব। প্রথমে ছয় তলায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ১২ তলায় অর্থ দফতরের যান তিনি। সেখানে অর্থ সচিবের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বৈঠক করেন। পাশাপাশি কর্মীদের পরিবার-পরিজনের কুশল সংবাদও জিজ্ঞেস করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের ছেলেমেয়ে কেমন আছেন তাও জানতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে দফতরের কর্মীদের উপস্থিতির হার নিয়ে প্রশ্ন করেন মুখ্যমন্ত্রী। দফতরের সচিবের কাছ থেকে জানতে চান, ফাইল কেন এত জমে আছে। উল্লেখ্য এর আগে আচমকা স্বরাষ্ট্র দফতর ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরে আচমকা হাজির হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসময় ডিএ আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন কর্মীদের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী কর্মীদের উপস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। প্রসঙ্গত বকেয়া ডিএর দাবিতে এখনও লাগাতার আন্দোলন করছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। এর ফলে বিভিন্ন দফতরে কর্মীর অভাবে কাজ এগোচ্ছে না। গোটা বিষয়টি নিজের চোখে দেখার জন্য এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সারপ্রাইজ ভিজিট করেন বলে মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
অন্যদিকে একই দিনে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে কুড়মিদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী। কুড়মি সমাজের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া বিবেচনার আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুড়মি সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতি হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টিও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে চলে বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে খুশি পূর্বাঞ্চলীয় কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। গত কয়েকদিন ধরেই একাধিক দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে জঙ্গলমহলে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছে কুড়মি সম্প্রদায়। ফলে জঙ্গলমহলে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ অনেকটাই চড়েছে। এদিন বৈঠকের জন্য পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের নবান্নে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে নবান্নে হাজির হন সংগঠনের তিন সদস্য শুভেন্দু মাহাতো, বিজয় মাহাতো এবং সুনীল মাহাতো। সঙ্গে ছিলেন শ্রীকান্ত মাহাতো, শান্তিরাম মাহাতো সহ জঙ্গলমহলের বেশ কয়েকজন বিধায়ক। সূত্রের খবর, বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তিন দফা দাবি পেশ করেন পূর্বাঞ্চলীয় আদিবাসী কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। তার মধ্যে যেমন কুড়মি সমাজ উন্নয়ন পর্ষদ নতুন করে গঠনের দাবি রয়েছে, তেমনই কুড়মিদের তফশিলি উপজাতি হিসেবে মর্যাদা দিতে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়ার দাবিও রয়েছে। তাছাড়া পুরুলিয়ার এক সরকারি কলেজের নামকরণ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শহিদ দুই কুড়মি নেতা চুনারাম মাহাতো এবং গোবিন্দ মাহাতোর নামে করারও আর্জি জানানো হয়। কুড়মি সমাজের দাবিদাওয়া বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজকের এই বৈঠকের পর কুর্মিরা তাদের আন্দোলন বন্ধ রাখে, নাকি তারা তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, সেটাই এখন দেখার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct