আপনজন ডেস্ক: এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামনের নির্বাচনী লড়াইয়ে বিরোধী ঐক্যের সম্ভাব্য কৌশল নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান পরিষ্কার করলেন।পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী হবে সেখানেই তার দল সমর্থন করবে। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন যে যেখানে কংগ্রেস শক্তিশালী, তাদের লড়াই করতে দিন। আমরা তাদের সমর্থন দেব, এতে কোনো ভুল নেই। তবে তাদের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকেও সমর্থন করতে হবে। তৃণমূল নেত্রী এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি আশা করেন যে আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আঞ্চলিক দল গুলিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে যেখানে তারা শক্তিশালী। বিভিন্ন রাজ্যের শক্তিশালী আঞ্চলিক দলগুলোকেও কংগ্রেসকে সমর্থন দিতে হবে। কর্ণাটকে বিজেপির ভরাডুবি ও কংগ্রেসে জয়ী হওয়ার পর ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে কংগ্রেসকে বার্তা দিলেন মমতা। কংগ্রেসকে সমর্থনের বার্তা দিলেও তাদের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বলেন আমরা কর্নাটক কে সমর্থন করব। অথচ আপনারা রোজ এখানে লড়াই করবেন। এটা তো ঠিক নয়।
উল্লেখ্য এর আগেও মমতা বার বার বিরোধী জোট এর কথা বলেন। যদিও কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এর আগে দিল্লিতে মমতা, সোনিয়া রাহুলের বৈঠক হলেও খুব একটা ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি দুইপক্ষের ক্ষেত্রে। তবে কর্নাটকের নির্বাচনী ফল বিরোধী রাজনৈতিক দল গুলির মধ্যে এক কংগ্রেস মুখী বার্তা লক্ষ্য করা যায়। এর আগে কংগ্রেস নেতা রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হওয়ার সময় ও নাম না করেই তৃণমূল সুপ্রিমো এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে টুইট করেছিলেন। সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসের জয় কথা বললেও বিজেপির পরাজয় কেই প্রধানত গুরুত্ব দেন তিনি এবং বিজেপি কে তীব্র সমালোচনা করেন। কর্নাটকে কংগ্রেসের জয়ের পরেই তৃণমূল জাতীয় কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা বলেন এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেসে সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিরোধী জোট গঠনের বার্তা দেন। তার এই বার্তায় যদিও কংগ্রেসে নীতি নিয়ে প্রশ্ন ছিলই তবে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতিরই ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মমতা বোঝাতে চেয়েছেন কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী সেখানে তৃণমূল সমর্থন করবে জানালেও পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়া উচিত। বিশেষ করে সাগরদীঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস যেভাবে সি পি আই এম কে সঙ্গে নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জয় এনেছে সেটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। সেই প্রশ্নে আদতে মমতা চান অন্য রাজ্যে কংগ্রেসকে সমর্থন করলেও কংগ্রেস যেনো এ রাজ্যে তৃণমূলকে সমর্থন করে। সাগর দীঘিতে হারের পর মমতার ক্ষোভ এতটাই চরমে ওঠে যে বিরোধী ঐক্য প্রশ্নে তিনি একলা চলো রে নীতি অবলম্বন করার কথা জানিয়ে দেন। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে যখন তৃণমূল সর্ব ভারতীয় দলের মর্যাদা হারায়। সেই সময় মমতার কাছে সর্ব ভারতীয় ক্ষেত্রে সর্ব বৃহৎ বিরোধী দল কংগ্রেসকে সমর্থন করা ছাড়া উপায় ছিলনা সেই সুযোগটা করে দিয়েছিল রাহুলের সাংসদ পদ চলে যাওয়ার পর। যদিও তৃণমূল সর্ব ভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসকে সমর্থনের কথা জানাচ্ছে কিন্তু রাহুলের ভূমিকার বিষয়ে তারা মুখে কোনো রা কারছেনা। এর আগে শরদ পাওয়ার রাহুলের সমর্থনে এগিয়ে এলেও মমতা নিরব থাকায় শ্রেয় মনে করেন। অবশ্য কর্নাটকের নির্বাচনে কংগ্রেস যেভাবে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছে তাতে বিরোধী দল গুলি উচ্ছসিত হয়ে পড়ায় মমতার সামনে কংগ্রেসকে সমর্থন করা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। যদিও শর্ত চাপিয়ে দিয়ে মমতা সাফ জানিয়ে দিলেন হাতে হাত ধরতে রাজি আছেন তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct