টপি লস্কর, গোসাবা, আপনজন: দক্ষিণ ২৪ পরগনা কে নদীমাতৃক বলা চলে, এখনো সেখানে বেশকিছু অঞ্চলে পরিবহণের মূল মাধ্যম জলপথই, কিন্তু সেই জলপথে যাতায়াতের পরিবহন গুলি এতটাই নিম্নমানের যে প্রাণহানির ঘটনা প্রায় লেগেই থাকে। রাজ্য সরকারের ২০১৭ সালের “জলধারা প্রকল্প” অনুযায়ী “ভুটভুটি” (কাঠের তৈরি, অনুন্নত মেশিন, নিরাপত্তার সঠিক ব্যবস্থা যার নেই) যা একসময়ে জল পথে যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম রূপে ব্যবহৃত হতো, সেই ভুটভুটিকে রাজ্য সরকার যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ২০১৭ সালে জলধারা প্রকল্প অনুযায়ী বাতিল করে, উন্নত মানের স্টিল বা উন্নত কাঠের পরিকাঠামো এবং উন্নত মেশিন দ্বারা সঠিক নিরাপত্তা দিয়ে গঠিত কোনো মাধ্যমকে ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করেন সেই মতো দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভিন্ন ফেরী পরিষেবা গুলিতে উন্নত মানের ভেসেল লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়, কিন্তু সুন্দরবনের অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ফেরী পরিষেবা গোসাবা ও মৌসুমী দ্বীপে, বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু ফেরিঘাটে যাতায়াতের জন্য এখনো সেই খেয়া নৌকার ব্যবহার করা হচ্ছে, ২০১৭ সালের “জলধারা প্রকল্প”অনুয়ারি রাজ্য সরকার ভুটভুটি মালিকদের এই প্রকল্প আওতাভুক্ত করে উন্নত মানের ভেসেল প্রদান করে প্রতিটি ফেরিঘাট মালিকদের। তারপরেও এখনো ভেসেল গুলিকে বসিয়ে রেখে সেই ভুটভুটির মাধ্যমে পারাপার চলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কিছু ফেরিঘাটে।
সেই কারনে, কিছুদিন পূর্বে ক্ষেত্রী ফাউন্ডেশনের কর্নধার রাজেশ ক্ষেত্রী এই জলধারা প্রকল্প কার্যকরী করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন এবং হাইকোর্ট সেই গ্রহনও করেন। অবশেষে হাইকোর্টের চিফ জাস্টিস টিএস সিভানগন ও বিচারপতি হিরনময় ভট্টাচার্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে জলধারা প্রকল্প আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে কার্যকরী করতে নির্দেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ ক্ষেত্রী ফাউন্ডেশনের এই জনস্বার্থ মামলা নৌকাডুবির ফলে অনেক মানুষের প্রান বাঁচাতে স্বার্থক হবে বলে জানাচ্ছেন মামলাকারী আইনজীবী রাজেশ ক্ষেত্রী। এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকারের তরফে কি ব্যাবস্হা গ্রহন করা হবে। তবে এখনো পর্যন্ত বেশ কিছু ফেরিঘাটে খেয়ে নৌকা দিয়ে ফেরি পরিষেবার কাজ চালানো হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct