আপনজন ডেস্ক: রং কীভাবে মানুষের জীবন তথা মেজাজ, আবেগ অনুভূতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে, সে ব্যাপারে দীর্ঘকাল ধরে ধারণা রয়েছে শিল্পী, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার, মনস্তাত্ত্বিকদের। ১৬৬৬ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন আবিষ্কার করেন, যখন পরিপূর্ণ সাদা আলো একটি স্বচ্ছ প্রিজমের মধ্য দিয়ে যায় তখন এর ভেতরে থাকা প্রতিটি রং আলাদাভাবে দৃশ্যমান হয়। নিউটন এও আবিষ্কার করেন যে, প্রতিটি রং একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (মধ্যবর্তী ব্যবধান) হয়ে থাকে, যাকে এর চেয়ে বেশি ভাগ করা যায় না। আরো গবেষণার পর জানা গেল, একাধিক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো মিশিয়ে কোনো নির্দিষ্ট একটি রং তৈরি করা সম্ভব। যেমন- লাল আলোকে হলুদ আলোর সঙ্গে মেশানো হলে পাওয়া যায় কমলা রং। আবার হলুদ ও বেগুনির মতো কিছু আলোকে পরস্পরের সঙ্গে মেশালে এর মিশ্রণ সাদা রঙে পরিণত হয়। একরঙের সঙ্গে আরেক রং মিশিয়ে কীভাবে নতুন একটি রং তৈরি করা যায়, তা সবচেয়ে ভালো বোঝেন শিল্পীরা। রং এর মাধ্যমেই একজন মানুষের মানসিকতার প্রকাশ ঘটে। রং ভালোবাসা, রাগ, অভিমান, আকর্ষণ ইত্যাদির প্রকাশের অন্যতম উৎস। যেমন-
লাল: লাল রং এর মানুষ বেশি আকৃষ্ট হন। তাই লাল রং এর সাহায্যে একজন নারী পুরুষের কাছে যেমন ঠিক তেমন পুরুষরাও নারীর কাছে সহজেই আকর্ষণীয় হয়ে উঠতে পারে।
নীল: গবেষণায় দেখা গেছে যারা নীল রং পছন্দ করেন, তাদের ওজন তুলনামূলক কম থাকে। যদি খাবার ঘরের রং নীল হয় তবে শরীরের ওজন কমে। কারণ এমন রং এর ঘরে বসে চাইলেও কেউ বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করতে পারবে না।
সবুজ: মস্তিষ্কের প্রশান্তির জন্য সবুজের বিকল্প নেই। এজন্যই টিভি স্টুডিওগুলোতে ‘গ্রিনরুম’ নামে একটি ঘর থাকে। অনুষ্ঠানের আগে শিল্পীরা সেখানে বসে মস্তিষ্ককে সু-স্থির করে নেন। তাই বলা চলে, মস্তিষ্ক শান্ত রাখতে সবুজ রংয়ের উপকারিতা অনেক।
হলুদ: হলুদ রং মস্তিষ্ককে জাগ্রত করে। তাই মনোযোগ বৃদ্ধিতে হলুদ রং অনেক সহায়ক।
গোলাপি: বিরক্তি ও রাগ কমাতে এই রংয়ের ভূমিকা অনন্য। যাদের পোশাকের মধ্যে গোলাপির প্রধান্য থাকে, তারা অন্যদের কাছে তুলনামূলক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে থাকেন। এটি মস্তিষ্কে বেশ প্রভাব ফেলে।
সাদা: সাদা পোশাককে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখি। সাদা শুদ্ধতা ও বিশ্বাসের প্রতীক। তাই তো নার্স ও চিকিৎসকরা সাদা পোশাক পরেন। প্রভাবের ক্ষেত্রেও সাদা রং কার্যকরী।
কালো: গবেষণায় দেখা গেছে, কালো পোশাক পরা লোক বেশি মারমুখী হয়। এটি অস্থিরকতার প্রতীক। বেশিরভাগ নারী এই রং এর পোশাক পরা পুরুষের কাছে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ বোধ করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct