নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: মন্ত্রীর গড়ে সমস্যায় চাষীরা, কিন্তু প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সমস্যার কথা তুলে ধরলেন না মন্ত্রী। হতাশ এলাকাবাসী। কটাক্ষ বিরোধীদের। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মন্ত্রী তজমুল হোসেনের গড় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা। তার গড়েই রয়েছে একাধিক বড় বড় সমস্যা। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু কৃষিক্ষেত্র এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা নেই। ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার টাল ভাকুরিয়া, দক্ষিণ ও উত্তর ভাকুরিয়া মৌজা গুলির মাঠে প্রায় ২ হাজার হেক্টর চাষের জমি রয়েছে বলে কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। ধান, গম, ভুট্টা, পাট ও সরিষা মূলত চাষ হয়ে থাকে ওই মাঠ গুলিতে। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৬ বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত ওই মাঠ গুলিতে বিদ্যুতিক খুঁটি পর্যন্ত পৌঁছায়নি। জলের অভাবে চাষের জমির মাটি ফুটিফাটা হয়ে গিয়েছে। তৃষ্ণার্ত জমির প্রবল পিপাসা মেটাতে চড়াদামে কেনা ডিজেল পুড়িয়ে পাম্প মেশিন চালিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে জমিগুলোতে জলসেচ করে থাকেন কৃষকেরা। চাষীদের অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার মালদায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মালদা ও মুর্শিদাবাদ দুই জেলাকে নিয়ে করেছেন প্রশাসনিক সভা। সেই সভায় হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বাড়ির জন্য কয়েকটি ইলেকট্রিক পোল চাইলেন। কিন্তু তাঁর বিধানসভাতে বিদ্যুৎ পরিসেষা না থাকার কারণে মাঠে চাষাবাদ ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছে না। সেই কথাগুলো তুলে ধরলেন না। মন্ত্রীর এই খুঁটি চাওয়া শুনে হতবাক এলাকার মানুষজন। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধীরা বিভিন্ন রকমের টিপ্পনি শুরু করেছেন। ’সিপিআইএম নেতা শেখ খলিল বলেন, মন্ত্রী হাওয়ার হয়েছেন। মন্ত্রীর কাছে এলাকার প্রকৃত সমস্যার কোনও খোঁজ নেই। উনি কি জানেন, বহু মাঠে এখনও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। বিদ্যুতের অভাবে চাষিরা জমিতে সেচের কাজ করতে পারছেন না! আর বলে দিলেন, বিদ্যুতের সমস্যা নেই। ’’ প্রাক্তন বিধায়ক তথা কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির সদস্য মোস্তাক আলম বলেন, আসলে মুখ্যমন্ত্রীর “গুড বুকে” থাকার জন্য ভয়ে তিনি সমস্যা নিয়ে মুখে খোলেননি। যদিও এই বিষয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী তজমুল হোসেনের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct