সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: ২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রিপোর্ট চাইলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বুধবার তিনি নির্দেশ দেন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে রিপোর্ট দিতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ২০১৬ সালের শেষ প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের নাম জমা দিতে হবে। পাশাপাশি রিপোর্টে উল্লেখ করতে হবে জেলা, জাতি, শ্রেণি-সহ প্রার্থীদের সমস্ত তথ্য। বোর্ডকে জেলা অনুযায়ী তালিকায় শেষ প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর জানানোর নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তিতে ২০১৬ সালে প্রাথমিকে ৪২ হাজার ৫০০ নিয়োগ হয়েছিল। অভিযোগ ওঠে, কোনও অ্যাপটিটিউড টেস্ট ছাড়াই হয়েছিল নিয়োগ। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলা সরানো হয়েছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে। কিন্তু, অন্যান্য মামলা এখনও রয়েছে তাঁর এজলাসে।
অতীতে প্রাথমিকে অ্যাপটিটিউট টেস্ট সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, যদি এই টেস্ট না হয় সেক্ষেত্রে কী ভাবে নিয়োগ করা সম্ভব? কলকাতা হাইকোর্টের এই বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ ছিল, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে যে হলফনামা দেওয়া হয়েছে তা অনুযায়ী, ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় অ্যাপটিটিউড টেস্ট না করে একটি নম্বর গড়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি এই মামলার প্রেক্ষিতে কোচবিহার, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর এবং হাওড়ার ইন্টারভিউয়াদের আদালতে হাজির করার নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, যাঁদের আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই ইন্টারভিউয়ারদের যাতায়াতের জন্য একটি নির্দিষ্ট অর্থ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মামলায় উঠে আসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গও। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, কোনও বিচারাধীন মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি সাক্ষাৎকার দিলে তিনি সেই মামলার বিচার করার অধিকার হারিয়েছেন। এরপরেই নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলা থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই মোতাবেক কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি একটি নির্দেশিকাও জারি করেছেন। ওই মামলাগুলি সরেছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে। কিন্তু, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও মামলা রয়েছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর তিনি বলেছিলেন, অন্যান্য মামলাগুলিও হয়তো তাঁর এজলাস থেকে সরে যেতে পারে। যদিও এখনও এই মর্মে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct