নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া, আপনজন: না এখানে নিম গাছে সিম ধরেনি, এখানে বেগুন গাছে ধরেছে অন্য কিছু। যা সম্ভব হয়েছে জংগল মহলের এক প্রান্তিক চাষির প্রায় ১২ বছরের চেষ্টায়। তাঁর দেখানো পথেই আগামী দিনে বদলে দিতে পারে লক্ষ লক্ষ কৃষকের ভাগ্য? লাভের মুখ দেখতে পারেন দেশের কৃষকেরা। যে সমস্যার নাকি এত দিন সে ভাবে কোন সমাধানই বলতে পারেন নি কৃষি বিজ্ঞানিরা? তবে এই নিয়ে চলছে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা। এবার নাকি সেই সমস্যার সমাধান হতে চলেছে। আগামী দিনে হয়তো বদলে যাবে চাষের দিশা।কমবে রাসায়নিক সার ও কীটণাশকের খরচ,আগামী দিনে লাভের মুখ দেখবেন চাষিরা। স্থানীয় কৃষি দফতরের ও দাবী তিনিই হয়তো প্রথম পথ দেখালেন।
কিন্তু ঘটেছে টা কি? বাঁকুড়ার জঙ্গল মহলের সারেঙ্গা ব্লকের কৃষক দীপক মিদ্যার কথায় টম্যাটো এবং বেগুন চাষের ক্ষেত্রে চাষিদের বড় সমস্যা হল ঝিমিয়ে পড়া রোগ। এই রোগের আক্রমণ হলে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি টম্যাটো এবং বেগুন গাছ, গাছ ভর্তি ফুল ফল অবস্থাতেও মারা যায় বেগুন টম্যাটো গাছ। মাথায় হাত পড়ে চাষিদের। দীপক মিদ্যার দাবী এই রোগের সেভাবে কোন ওষুধ নেই। অথচ বেগুন এবং টম্যাটোর অনান্য সব্জির তুলনায় বেশি থাকায় বেগুন এবং টম্যাটো চাষ করতে গিয়ে বারবার ঝিমিয়ে পড়া রোগে গাছ মরে যাওয়ার কারনে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। আর অনান্য চাষের তুলনায় এই দুই চাষের খরচ ও বেশি। তখন থেকেই যেদ চেপে বসে ওই রোগের হাত থেকে কি ভাবে বাঁচানো যাবে বেগুন এবং টম্যাটো গাছকে। বেশ কয়েক বছর পর তেতো বেগুন গাছের সাথে টম্যাটো গাছের কলম পদ্ধতিতে চারা তৈরি করেন তিনি।প্রথমে বাড়ীতে পরীক্ষা মূলক ভাবে কয়েকটি চারা তৈরি করে বাড়ীতে লাগান, এবং সেই চারা থেকে ফল ও হয় অনেক বেশি এবং দেখা যায় ঝিমিয়ে পড়া রোগের আক্রমণ ও হয়নি সেই গাছ গুলিতে। পাশাপাশি সারা বছরের বিভিন্ন আবহাওয়াতেও গাছের কোন ক্ষতি হয়নি। ব্যাস, যেন নিশব্দ বিপ্লব। এরপর ঐ পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি বানিজ্যিক ভাবে চাষ করার। তেতো বেগুন গাছের সাথে টম্যাটো চারার কলম পদ্ধতিতে প্রায় ৫০০ চারা তৈরি করে জমিতে লাগান। সেই ত্ম্যাতাও গাছ এখন ফলে ফুলে ভর্তি। সেই নেই ঝিমিয়ে পড়া রোগের আক্রমণ। আশা বাদী ভূগোলে স্নাতক দিপাক মিদ্যা। তবে শুধু টম্যাটো নয়,ওই একই পদ্ধতিতে প্রস্তুতি শুরু করেছেন বেগুন চাষের। চারাও তৈরি হয়েগেছে। সেতাতেও সাফল্য মিলবে বলে দাবী ঐ চাষির। দীপক মিদ্যার এই অভিনব চিন্তা উদ্ভাবনি ভাবনা কুর্নিশ জানিয়েছেন ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা সজল পতি।পাশাপাশি সারেঙ্গা ব্লকের কৃষি প্রশিক্ষণে দীপক মিদ্যার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct