নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: ব্যবসায়ী সুবিধার্থে বেআইনিভাবে সরকারি নয়নজুলি ভরাট করে কালভার্ট নির্মাণ ও পাকা বাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনার অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেল তিনটা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তুলসীহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের কুশিদাগামী রাজ্য সড়কে তুলসীহাটা বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী ছুটে গেলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ী। এই নিয়ে এদিন চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে তুলসীহাটা এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তুলসীহাটা নয়াটোলা পাওয়ার হাউস থেকে শুরু করে ভবানীপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রয়েছে সরকারি নয়নজুলি। তুলসীহাটা এলাকার একমাত্র জল নিকাশী হচ্ছে ওই নয়নজুলিটি। তুলসীহাটা এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বিজয় গুপ্তা ওই নয়নজুলির পাশে কিছু জমি কিনে রেখেছেন। নিজের সুবিধার্থে ওই নয়নজুলির কিছু অংশ ভরাট করে তার উপরে কংক্রিটের কালভার্ট নির্মাণ করে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে।
স্থানীয়রা খবর পেয়ে কাজে বাধা দিতে গেলে বিজয় গুপ্তার পরিবারের লোকেরা স্থানীয়দের হুমকি দেয় এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে পুলিশের সঙ্গেও কয়েকজন ব্যবসায়ী ধস্তাধস্তি করেন বলে অভিযোগ। আরো জানা গেছে ওই নয়নজুলিটি ভরাট করে জল নিকাশী বন্ধ করে ফুলন দেবী পাড়ায় কয়েকটি বসত বাড়ি ও ভবানীপুর ব্রীজে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কাপড় ও ওষুধের দোকান গড়ে উঠেছে। নয়নজুলির উপর থেকে সেগুলিকে সরাতে সরব হয়ে উঠছে স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, তুলসীহাটা এলাকার একমাত্র শ্মশান ওই নয়নজুলিটির পাশে রয়েছে। রয়েছে একটি মন্দিরও। দীর্ঘ দেড়শো বছর ধরে ওই শ্মশানের দখলে রয়েছে নয়নজুলিটি। তুলসীহাটা এলাকার ব্যবসায়ী বিজয় গুপ্তা সেটিকে বুজিয়ে রাতারাতি কালভার্ট নির্মাণ করে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করে দিয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা। এই নয়নজুলি বোজানো হলে বর্ষার সময় এলাকার জল নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। স্থানীয় বাসিন্দা উত্তম কুমার মাল্লাহ জানান, ২০১৭ সালে বিডিও ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের উপস্থিতিতে শ্মশানটি মাপজোক করা হয়েছিল। দেড়শো বছর ধরে শ্মশানের দখলে রয়েছে ওই নয়নজুলিটি। কিছু পুঁজিপতি ব্যবসায়ী বছর দুয়েক আগে জমি কিনে নয়নজুলিটি ভরাট করতে শুরু করেছে।ব্যবসায়ী প্রেম প্রসাদ রাম জানান, এই নয়নজুলিটি মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌজার অন্তর্গত। পঞ্চায়েত ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিকের অনুমতিতে মাটি ভরাট করা হয়েছে। নয়নজুলির পিছনে যাদের জমি রয়েছে সামনের সরকারি খাস জমিটি তারা দখলে থাকা স্বাভাবিক। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেবদূত গজমের জানান, আপাতত মাটি ভরাটের কাজটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct