নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর, আপনজন: স্বামীর মৃত্যুর কেটে গেছে ছয় মাস। এক নাবালক সন্তানকে কোলে নিয়ে কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রথম পক্ষের স্ত্রী। শ্বশুর বাড়িতেও মিলছে না ঠাই। দিশেহারা হয়ে ছুটছেন পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সদস্য ও গ্রামের মোড়ল মাতব্বরদের কাছে। তবুও শ্বশুর বাড়ির লোকেরা গ্রহণ করতে নারাজ ওই বধূকে। এই নিয়ে শুক্রবার শ্বশুরবাড়ি এলাকায় এসে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন ওই গৃহবধূ। স্বামীর দেহ কবর থেকে তুলতে ও গ্ৰামের নির্দোষ ব্যক্তিদের নামে থানায় মামলা করাতে বাধ্য করিয়ে ছিলেন এলাকারই তৃনমূলের দুই কর্মী বলে অভিযোগ মৃত যুবকের স্ত্রীর। এই কথা জানাজানি হতেই গ্ৰামে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, দীর্ঘ ছয় মাস আগে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাড়ড়া গ্রামের বাসিন্দা হাসনুর আলি র শোয়ার ঘর থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। মৃত যুবকের প্রথম পক্ষের স্ত্রী আরবিনা বিবির অভিযোগ তার স্বামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছে তার সতীন তথা দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী আনা বিবি। এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গেলে গ্রামের দুই তৃনমূল কর্মী আফতাব হোসেন ও আরিফ আলি গ্রামের নির্দোষ যুবক রাকিব আলি ও তার বাবা মায়ের নাম সহ আটজনের নামে মামলা দায়ের করাতে বাধ্য করেন বলে জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে মৃত দেহটি কবর থেকে উদ্ধার করেন পুলিশ। রাকিবকে পুলিশ গ্ৰেফতার করে। তার তিন মাসের জেল হয়। বাকি সাত জন কোর্ট থেকে বেল পেয়ে বাড়িতে রয়েছেন। মামলা চাঁচল মহকুমা কোর্টে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে।
অভিযোগকারী প্রথম পক্ষের স্ত্রী আরবিনা বিবি জানান, তার স্বামীকে তার সতীন ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মেরেছে। তার নামে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে আফতাব হোসেন রাবিক ও তার বাবা মায়ের নামটি ষড়যন্ত্র করে এই মামলায় জড়িয়ে দেয়। কোর্টে তাকে বায়ান দিতে হলে সে সত্য কথাটি জানাবেন বলে জানান। রাকিব জানান, ওই বধূকে হুমকি দিয়ে থানায় মামলা করিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। আরবিনা বিবির পরিবারের সঙ্গে তাদের কখনো ঝামেলা ছিল না। যেদিন হাসনুর মারা যায় সেদিন সে বাড়িতে ছিলেন না। এর মূলে পুরোপুরিভাবে জড়িয়ে আছে দুই তৃনমূল কর্মী আফতাব হোসেন ও আরিফ আলি। আফতাব হোসেন জানান, ওই বধূটির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এবং রাকিব ও তার পরিবারের সঙ্গেও তার কোন বিবাদ নেই। তাহলে কেন সে মামলায় তাদের নাম জোড়াতে যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct