নাজিম আক্তার, চাঁচল, আপনজন: আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে হতে হবে কোটিপতি।গরীবদের কোনো স্থান নেই।এই আশঙ্কায় দল ছাড়লেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা হামেদুর রহমান। জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের মতিহারপুর অঞ্চলের দরিয়াপুরে ছিল কংগ্রেসের ইফতার পার্টি ও যোগদান কর্মসূচি। এদিন ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়েছিলেন মালতীপুরের কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক আলবেরুনী জুলকারনাইন, হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রাক্তন বিধায়ক মোস্তাক আলম ও সুজাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরী সহ বেশ কয়েকজন প্রাক্তন বিধায়ক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চাঁচল-১ নং ব্লকের কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আনজারুল হক,মতিহারপুর অঞ্চল কংগ্রেস সভাপতি শেখ কামাল সহ জেলা ও রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বরা।এদিন ওই ইফতারে প্রায়ে সাড়ে তিন হাজার মানুষ সামিল হয়েছিলেন বলে দাবি কংগ্রেসের। পাশাপাশি যোগদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় সেখানেই। তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করেন ওই অঞ্চলের ইমামপুর বুথের গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তৃণমূলের প্রার্থী হামেদুর রহমান সহ শতাধিক তৃণমূল কর্মী। নবাগতদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন ব্লক,জেলা ও রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব।হামেদুর রহমান কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন,তৃণমূলে গরীবদের কোনো স্থান নেই।তারা প্রার্থী হওয়ারও যোগ্যতা রাখে না। প্রার্থী হতে গেলে হতে হবে বিত্তশালী।আমি একজন গরীব, ছোটো কাপড়ের দোকান রয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে বুথের মধ্যে ঘাসফুল লাগিয়ে সযত্নে কর্মী সংখ্যা বাড়িয়েছিলাম।দলে কোনো গুরুত্ব পায়নি। আজ সেই দলের প্রার্থীর হওয়ার জন্য চলছে মোটার অঙ্কের দর কষাকষি। এই অঙ্কের দৌড়ে আমি ঠাই পাবনা,আশঙ্কায় দল ছাড়লাম। চাঁচল-১ নং ব্লক কংগ্রেস কমিটির সভাপতি আনজারুল হক কটাক্ষ করে বলেন, শাসকদল তৃণমূলের প্রার্থী হতে হলে টাকার অঙ্ক গুণতে হবে। পুরাতন কর্মীদের কোণঠাসা করছে। দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল।তাই তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছে অনেকে। মতিহারপুর অঞ্চল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি শেখ কামালুদ্দিন বলেন, শতাধিক মানুষ স্ব ইচ্ছায় কংগ্রেসে যোগদান করলেন।তাদের স্বাগত জানানো হল দলে। কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে পাল্টা মন্তব্য করেছে তৃণমূল। মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক মেহবুব আলম সরকার বলেন, রাজ্য নেতৃত্ব যোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী করবে। আইপ্যাক ইতিমধ্যে এলাকায় সার্ভে করছেন, কাকে প্রার্থী করলে জয়লাভ হবে। হামেদুল বাবুকে একবার সুযোগ পেয়েছিলেন, তিনি জয়ী হতে পারেননি। আবার তাকে দল কি আশায় টিকিট দিবে। তবে মানুষ যাকে চাইবে দল তাকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবেন। টাকা নয়, স্বচ্ছ ভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct