আপনজন ডেস্ক: রাজনৈতিক পালাবদল করার ইচ্ছা প্রকাশ করে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় ফের রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিলেন। মুকুল রায়কে পাওয়া যাচ্ছে না, এই অভিযোগ তুলে তার পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের অভিযোগ দায়েরের পর মুকুল রায়ের সন্ধান মেলে রাজধানী দিল্লিতে। শুভ্রাংশু তার বার বাবার মস্তিষ্ক বিভ্রাটের কথা বলা হলেও মুকুল রায় সাংবাদিকদের সামনে ফের বিজেপিতে ফিরে আসার কথা ব্যক্ত করায় রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে এক সংবাদমাধ্যমে মুকুল রায় বলেছেন, ‘বিজেপিতেই রাজনীতি করব, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুভ্রাংশুরও বিজেপি করলেই ভালো।’ এমনকী অমিত শাহ, জেপি নাড্ডাদের সঙ্গে তিনি দেখা করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বলেছেন, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত, তৃণমূল আর করব না।মঙ্গলবার দিনভর রাজ্য রাজনীতেতে আলোচনার বিষয়বস্ত ছিল মুকুল রায়। যদিও তার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যা থেকে। সূত্রের খবর মুকুল রায় সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে কলকাতার নেতাজি সুভাষ বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৬ই ৮৯৮-এ করে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন। আড়াই ঘণ্টা পর রায় যখন দিল্লি বিমানবন্দরের টার্মিনাল ১এ থেকে বের হন, তখন বাংলার রাজনৈতিক মহল এবং সম্ভবত রাজধানীতে তাদের সহকর্মীদের একটি অংশ ইতিমধ্যে “নিখোঁজ” নেতাকে নিয়ে জল্পনা শুরু করে দেয়। এই জল্পনাগুলির বেশিরভাগই বাংলায় উচ্চ পর্যায়ের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির সাথে রায়ের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ইনিংসকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছিল। বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অনুপম হাজরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘দ্য রিটার্ন’ নামক একটি পোস্টে বিতর্ক বাড়িয়ে দেন।
তবে সোমবার রায়কে খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং ছেলে শুভ্রাংশু এনএসসিবিআই বিমানবন্দর থানায় এবং তার নিজের নির্বাচনী এলাকা বিজপুর থানায় দুটি “নিখোঁজ ব্যক্তি” অভিযোগ দায়ের করে অভিযোগ করেছেন যে রায়কে দিল্লি যাওয়ার জন্য মগজধোলাই করা লোকেরা “অপহরণ” করেছে। জানা গেছে, শুভ্রাংশু তার বাবার ভ্রমণ আটকাতে বিমানবন্দরে ছুটে গিয়েছিলেন এবং বিমানটি উড্ডয়নের আগে তার বাবাকে বিমান থেকে নামানোর জন্য এয়ারলাইন্সের কাছে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে রাজি করাতে ব্যর্থ হন। রায়ের সঙ্গে ছিলেন তাঁর পরিচারক ভগীরথ মাহাতো এবং তাঁর গাড়িচালক রাজু। শোনা যায়, দিল্লি যাত্রার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার ছেলের সাথে তার ঝগড়া হয়েছিল। অন্যদিকে মুকুল বলেছিলেন, আমি একজন সাংসদ, একজন বিধায়ক। আমি কি দিল্লি আসতে পারি না?,যদিও শুভ্রাংশু বলেছিলেন যে তাঁর বাবা “ডিমেনশিয়ায় ভুগছিলেন”। এই বিতর্কের মধ্যে মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে সাংবাদিকদের কাছে মুকুল মুখ খোলায় তাকে নিযে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি নিয়মিত দিল্লি আসছি, এবার ব্যবধান টা একটু বেশি হয়েছে। যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন আমি এখানেই থাকব,” সম্প্রতি কলকাতায় মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করা রায় বলেন। ফের চর্চায় মুকুল রায়। সোমবার সন্ধের পর আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে দেখা যায়। এদিকে বাবা মুকুল রায়ের খোঁজে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পুত্র শুভ্রাংশু রায়। মঙ্গলবার দিনভর মুকুল রায়কে নিয়ে জোরদার চর্চা চলেছে। মঙ্গলবার রাতে একটি সংবাদমাধ্যমকে মুকুল রায় যা বললেন তাতে আবারও সব ফোকাস ঘুরে গেল তাঁর দিকেই। কী বলেছেন মুকুল রায়? তিনি বলেন, ‘বিজেপিতেই রাজনীতি করব। আমিত শাহের সঙ্গে দেখা করব। জেপি নাড্ডার সঙ্গেও কথা বলব। কেউ জোর করেনি, স্বেচ্ছায় দিল্লি এসেছি। একটু অসুস্থ ছিলাম বলে পুরোদস্তুর রাজনীতি করতে পারিনি। এখন শরীর ভালো, রাজনীতি করব।’ এখানেই থেমে থাকেননি তিনি। পুত্র শুভ্রাংশুর রাজনৈতিক জীবন নিয়েও নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন মুকুল। তাঁর কথায়, ‘শুভ্রাংশুরও বিজেপিতে যোগ দেওয়া উচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিজেপি করলেই শুভ্রাংশুর ভালো। আমি কোনওদিন তৃণমূল করিনি। আমি বিজেপিরই বিধায়ক। বিজেপি বিধায়ক হিসেবে এখানে থাকার ব্যবস্থা দলের। ১০০ শতাংশ নিশ্চিত, তৃণমূল আর করব না।’
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct