আপনজন ডেস্ক: ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) ইতিহাস, নাগরিক বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং হিন্দি বই থেকে অনেক অধ্যায় এবং তথ্য সরিয়ে দিয়েছে। এতে মুঘল, মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে, ২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা, জরুরি অবস্থা, স্নায়ুযুদ্ধ এবং নকশাল আন্দোলন সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বিরোধীর। বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশোধের স্পৃহা নিয়ে বইয়ে দেওয়া ঐতিহাসিক তথ্যগুলোকে অপমান করছে। বিরোধীদের অভিযোগের পরে, শিক্ষা মন্ত্রক শনিবার বলেছে, সিবিএসই-এর ২৫ জন বিশেষজ্ঞ এবং ১৬ জন শিক্ষকের পরামর্শের পরেই সিলেবাসটি যুক্তিযুক্ত করা হয়েছে। যেসব পাঠ্য বিষয় সরানো হয়েছে তা ফেরত আনা হবে না। পাঠ্য বইয়ে এনসিআরটির এই পরিবর্তন বিষয়ে এনসিপি সাংসদ মহম্মদ ফয়জল লোকসভায় গত বছর ১৮ জুলাই, এনসিআরটির পাঠ্যক্রম পরিবর্তন সম্পর্কিত একটি প্রশ্ন করেছিলেন। তার সেই প্রশ্নের উত্তরে জানা যায়, কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করেছে, যারা সিলেবাস পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন। ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটেছে। ইতিহাসের জন্য ৫ জন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জন্য ২ জন বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।
সিলেবাস পরিবর্তিত হওয়ার সাথে সাথে বিরোধীরা প্রতিশোধের বোধ নিয়ে কেন্দ্রে কাছে এ নিয়ে অভিযোগ করে। তবে এনসিইআরটি ডিরেক্টর দীনেশ সাকলানি বলেছেন, এনসিআরটির পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন সম্পর্কে অফিসিয়াল তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু তথ্য মিস করা হতে পারে। তবে, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের পর মুছে ফেলা অধ্যায়গুলো আবার বইয়ে যোগ করা যাবে না। যাইহোক, ২০২৩-২৪ বর্ষের বইগুলি প্রায় জাতীয় পাঠ্যক্রম কাঠামোর অধীনে সংশোধন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সিলেবাস পরিবর্তনের জন্য বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করা হয়েছিল। ইতিহাসের জন্য এনসিইআরটি দ্বারা পরামর্শ করা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে, জেএনইউ ইতিহাসের অধ্যাপক উমেশ কদম, হিন্দু কলেজের ইতিহাসের সহযোগী অধ্যাপক অর্চনা ভার্মা, ডিপিএস আরকে পুরম ইতিহাসের শিক্ষক শ্রুতি মিশ্র, কেভি দিল্লির অন্য দুই শিক্ষক , কৃষ্ণ রঞ্জন ও সুনীল কুমার সংশ্লিষ্ট ছিলেন। তিনি আরও জানান,মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপককে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের জন্য নির্বাচিত করেছিল এনসিইআরটি। এনসিইআরটি চারজন বিশেষজ্ঞের সাথে দুটি বৈঠকের মাধ্যমে পরামর্শ করে। এর মধ্যে রয়েছে ভোপালের এনসিইআরটি-র আঞ্চলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ভ্যানথাংপুই খোবাং, হিন্দু কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক মনীষা পান্ডে, স্কুলের শিক্ষক কবিতা জৈন এবং সুনিতা কাঠুরিয়াও রয়েছেন। ফলে, মুঘল ইতিহাস কিংবা গুজরাত দাঙ্গার ইতিহাস অথবা মৌলানা আবুল কালাম আজাদের উল্লেখ পাঠ্য সূচিতে থেকে বাদ দেওয়ার পর তা আর ফেরানোর সম্ভাবনা নেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct