নায়ীমুল হক, আপনজন, বয়স যে আজও তাকে হার মানাতে পারেনি তা ১০২ বছর বয়সে আরও একবার প্রমাণ করলেন ভারতীয়-মার্কিন গণিতবিদ তথা পরিসংখ্যানবিদ ক্যালিয়ামপুদি রাধাকৃষ্ণ রাও। সংখ্যা নিয়ে সারা জীবনের সাধনা তাঁর, মানুষের বয়সটাও যে কেবল একটা সংখ্যা মাত্র তা যেন সত্যি সত্যিই প্রমাণ করলেন তিনি। গণিত এবং পরিসংখ্যান বিদ্যায় অভূতপূর্ব অবদানের জন্য এ বছর ‘আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান পুরস্কার’ পাচ্ছেন সি.আর. রাও। কর্ণাটক তার জন্মভূমি হলেও এককালে কলকাতাতেই প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর গবেষণা পত্র। ‘ক্যালকাটা ম্যাথমেটিকাল সোসাইটি'র বুলেটিনে প্রকাশিত হওয়া সেই বিশেষ গবেষণাটির জন্যই এবার আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান পুরস্কারপুরস্কার পাচ্ছেন তিনি।
জন্মসূত্রে তিনি মার্কিন হলেও, জন্মের পর থেকেই রয়েছেন ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের কর্ণাটকে। সেখানেই তাঁর বেড়ে ওঠা। প্রাথমিক স্কুল শিক্ষার পাঠ চুকিয়ে তার পর আসেন কলকাতায়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই প্রথমে পরিসংখ্যানে এমএ করেন। তারপর অন্ধ্রপ্রদেশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্কে এমএসসি। এমএসসি শেষ করে বিদেশে যান। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে ডক্টরেট এবং ১৯৬৫ সালে কেমব্রিজ থেকেই ডিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন ক্যালিয়ামপুদি রাধাকৃষ্ণ রাও। দীর্ঘ প্রায় ৭৫ বছর ধরে বিশ্বের গণিত ও পরিসংখ্যানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছেন তিনি। আজ জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে এসে অবশেষে মিলল এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।বর্তমানে সি আর রাও বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রবীণ গবেষক। পাশাপাশি পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির এমিরিটাস প্রফেসর পদেও আসিন তিনি। ভারত সরকার ১৯৬৮ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০১ সালে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার তুলে দেন বিশ্ববিখ্যাত এই গণিতজ্ঞের হাতে।যে আবিষ্কার তাঁকে গোটা বিশ্ব বহুদিন মনে রাখতে বাধ্য, সেগুলি হল, “ক্রেমার-রাও লোয়ার বাউন্ড”, “রাও-ব্ল্যাকওয়েল থিওরেম”, “তথ্য জ্যামিতি”। উল্লেখ্য, হিগস বোসন কণা পর্যবেক্ষণে রাওয়ের তথ্য জ্যামিতিই ব্যবহৃত হয়েছে। চিকিৎসা গবেষণা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও সি আর রাও এর গবেষণালব্ধ ফল আজ গোটা বিশ্বে অনুসৃত। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউট আসন্ন বিশ্ব পরিসংখ্যান কংগ্রেসে বিশ্ববিখ্যাত এই ভারতীয় গণিত রাশিবিজ্ঞানীর হাতে নোবেল পুরস্কারের সমমানের এই পুরষ্কার তুলে দেবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct