আপনজন ডেস্ক: এই বছরের হজ যাত্রা ভারতের জন্য একটি ঐতিহাসিক হতে চলেছে। ৪,৩০০ এরও বেশি মহিলা মাহরাম বা পুরুষ অভিভাবক ছাড়াই হজযাত্রা করার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন। এটি ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের বৃহত্তম দল যারা স্বাধীনভাবে হজে যাত্রা শুরু করেছে। যদিও এটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মহিলাদের অংশগ্রহণের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়, তবে এটি মুসলিম ধর্মীয় নীতির সংস্কার নিয়ে বিতর্কের পথও তৈরি করেছে।বছরের পর বছর ধরে সৌদি আইনে হজ ও উমরাহ পালনের জন্য মহিলা হজযাত্রীদের সঙ্গে পুরুষ আত্মীয় (যেমন স্বামী ও বাবা) থাকতে হতো। তবে সৌদি আরব ২০২২ সালের অক্টোবরে এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেয় এবং ৪৫ বছরের বেশি বয়সি মুসলিম মহিলাদের একা ভ্রমণের অনুমতি দেয়। এই পদক্ষেপকে মুসলিম বিশ্বে নারী অধিকার ও ক্ষমতায়নের দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে দেখা হয়েছিল।
হজ একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার চেয়েও বেশি কিছু। মানুষ বছরের পর বছর অপেক্ষা করবে এবং ‘লাকি ড্র’-এর আশা করবে। নিকটতম পুরুষ আত্মীয় ছাড়া মহিলারা হতাশ বোধ করেছিলেন। কারণ তাদের দূরবর্তী আত্মীয়দের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করতে হয়েছিল। একজন মুসলিম হিসেবে শেখানো হয় যে হজ ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি এবং যারা শারীরিক ও আর্থিকভাবে এটি সম্পাদন করতে সক্ষম তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কর্তব্য। এর মধ্যে রয়েছে পবিত্র নগরী মক্কা ভ্রমণ এবং ইসলামের নানা অনুশাসন মেনে আল্লাহর আনুগত্য প্রকাশে আচার-অনুষ্ঠান ও প্রার্থনায় অংশ নেওয়া। এটি চিন্তাভাবনা, আধ্যাত্মিক পুনরুজ্জীবন এবং ঐশ্বরিক করুণা খোঁজার সুযোগ প্রদান করে। হজ একটি ঐক্যবদ্ধ অভিজ্ঞতা যা বিভিন্ন পটভূমির মুসলমানদের বিশ্বাসের সম্মিলিত প্রকাশে একত্রিত করে, তাদের মধ্যে অভিন্ন মূল্যবোধ এবং মানবতার উপর জোর দেয়। দেখা গেছে মুসলমানরা বহুআর্থিক বাধ্যবাধকতার মুখোমুখি হওয়া সত্ত্বেও হজ করতে সক্ষম হওয়ার জন্য বছরের পর বছর সঞ্চয় করেন। গভীর আবেগ নবী মুহাম্মদের জন্মস্থান পরিদর্শনের মানুষের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। ইসলাম মহিলাদেরকে তাদের ঈমান চর্চার সমান সুযোগ প্রদান করেছে। এবং এখন, তারা সত্যিকার অর্থে তাদের ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা সমান ভাবে পালন করতে পারে। এই পদক্ষেপটি ইসলামে আল্লাহর কাছে সবাই সমান— তা প্রতিষ্ঠিত করে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct