ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বোমা ছোড়ার মধ্য দিয়ে যে বিভীষিকাময় পরিবেশ তৈরির নীলনকশা করে রাশিয়ান বাহিনী, তা আজ ব্যর্থতায় পর্যবসিত। রাশিয়ান সেনাদের কৌশল খুব একটা কাজে আসছে না। রুশ সেনা বহরে লাশের সারি ক্রমাগতভাবে দীর্ঘতর হচ্ছে! সে বিষয় নিয়ে লিখেছেন সজল মজুমদার।
সময় সর্বদা জলধারার মতো গতিশীল। গতিশীল জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ আজ যে যার মতো করে ছুটে চলেছে। বলা বাহুল্য ভিন্ন ভিন্ন কর্মের মাধ্যমে মানুষ সাধ্যমত তাদের নিজস্ব জীবিকা নির্বাহ করে চলেছে। প্রতিটি মানুষের কর্মজীবনের ধরন ধারণ কিন্তু আলাদা। তবে সর্বাগ্রে মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সুশীল সমাজে মানুষকে নিজের পরিবারের সাথে বসবাসের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মানুষকেই তাদের নিজস্ব কর্মজীবনে কিছু ভালো এবং মন্দ মানুষের সাথে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়। আর ঠিক এখানেই বাস্তব এবং রূঢ় সত্যের সাথে পরিচয়টা ঘটে থাকে। বলতে গেলে দিব্য চক্ষু অনেক মানুষের এখানেই উন্মোচিত হয়। আবার অনেকের দিব্য চক্ষু খুললেও আশপাশের পরিস্থিতির চাপে পড়ে সেই মানুষটি হয়তো অন্ত: চক্ষু বুজিয়ে রাখতে বাধ্য হয়। তবে বর্তমানে সুযোগ সন্ধানী, স্বার্থবাদী, হিংস্র মনোভাব সম্পন্ন মুখোশধারী মানুষের চাপে সৎ, সহজ, সরল, মিষ্টভাষী, নম্র ভদ্র মানুষগুলো সর্বদাই পদদলিত হচ্ছে। মানব অধিকার হননের খন্ড চিত্র সর্বত্রই দেখা মেলে। আবার অনেক সময় কর্মক্ষেত্র যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হতেও প্রায়শই দেখা যায়, আরে না না, সেই যুদ্ধের কথা বলছি না, অর্থাৎ নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে একটু আকটু হালকা স্নায়ুযুদ্ধ- ঠুক ঠাক চলেই বৈকি। ঠিক যেনো শান্ত, স্নিগ্ধ, শীতল নদীর তলদেশে অবস্থানকারী প্রাণঘাতি চোরাবালি বা পাকের মতো। তাই কর্মজীবনে প্রতিটি মানুষকে প্রতি পদে - প্রতি ক্ষেত্রে অত্যন্ত সচেতন, সজাগ,সতর্ক থাকতে হয়। পেশাগত সম্পর্ককে কখনো আন্তরিক ও অন্তরঙ্গ সম্পর্কের সাথে গুলিয়ে ফেলা একেবারেই ঠিক নয়। আসলেই কর্ম জীবন হল মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, এর ওপরেই ঠিক নির্ধারিত হয় -- কে সুখ্যাত তথা বিখ্যাত হয়ে পরবর্তীতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন আবার কে কুখ্যাত হয়ে বৃহৎ সমাজের মনে দাগ রেখে যাবেন। এখানেই অর্জিত বিদ্যার সাথে নিজের চিন্তা ও চেতনার সমন্বয়ে নতুন নতুন তত্ত্ব ও কার্যাবলী প্রদর্শনের ক্ষেত্র। কর্মজীবনই প্রকৃতপক্ষে মানুষের সার্থকতা এবং ব্যর্থতার পরিচয় বহন করে। ছাত্র এবং কৈশোর জীবনের বন্ধু এবং কর্মজীবনের বন্ধুদের সংজ্ঞা অনেকটাই আলাদা। তবে কর্মজীবনের দীর্ঘ পথে কখনো কদাচিত প্রকৃত সঠিক পথ প্রদর্শনকারী সহকর্মীর দেখা মিললেও মিলতে পারে। নিজের সৃজনশীলতা, দায়বদ্ধতা, কর্মপটুতা প্রদর্শন করার প্রকৃত ক্ষেত্র হলো কর্মজীবন, আবার ঠিক তার বিপরীত চিত্রটিও দেখা যায় এই কর্মজীবনেই। রং-বেরঙের মানুষের দেখা মেলে কর্মজীবন নামক দীর্ঘ এই সফরে। নিন্দুক ,সমালোচক, ঈর্ষাকাতর , ধামাধারী মানুষ থেকে প্রকৃত শুভাকাঙ্ক্ষী, পরোপকারী, বন্ধু ভাবাপন্ন ,মেরুদণ্ডী মানুষ এই এক কর্মজীবনই দেখতে পাবেন। কর্মজীবনে মানুষ নৈতিক দায়িত্ববোধের সাথে সুশৃংখল, সময় নিষ্ঠষ্টশীল ভাবে নিজের কর্ম সম্পাদন করলে কোনরূপ প্রশ্নের মুখে হয়তো কখনো নাও করতে পারে,আবার তার উল্টো দিক থেকে কর্ম সম্পাদন করলে পদে পদে প্রশ্ন হয়রানির সম্মুখীন হয়তো তাকে হতেই হবে। পছন্দ অবশ্যই সেই কর্মজীবী মানুষটির ওপর নির্ভর। কর্মজীবনে কাটানো ভালো মন্দ, মিষ্টি তেতো, অম্ল মধুর স্মৃতিগুলোই একসময় অবসর জীবনে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে অমূল্য সম্পদ রূপে বিরাজমান হয়ে থাকবে। সুতরাং বলা যায়, কর্মজীবনে আপন আপন কর্মের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া কোন কর্মই সফলতার মুখ দেখতে পারেনা। সাফল্যতা পেতে হলে নিজ কর্মের প্রতি গভীর ভালোবাসা থাকাটাই তাই আবশ্যিক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct