আপনজন ডেস্ক: বিরোধী দলগুলির তীব্র হই-হট্টগোলের জেরে বৃহস্পতিবার অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি হয়ে গেল লোকসভার অধিবেশন। একই গণ্ডগোলের ছবি দেখা গিয়েছে রাজ্যসভাতেও। এদিন রাজ্যসভা বেলা দুটো পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়েছে। আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে আনা অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) তদন্তের দাবিতে বৃহস্পতিবার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিরোধীরা। বিরোধী দলের সদস্যরা তাদের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এদিন লোকসভায় সরব হন । লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বলেন, বিরোধী সদস্যদের আচরণ নিম্নকক্ষের মর্যাদাকে খর্ব করেছে। বিরোধীরা “পরিকল্পিতভাবে” লোকসভার কার্যধারাকে ব্যাহত করেছে বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, এই ধরনের আচরণ সংসদীয় ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এবং সংসদ বা দেশের জন্য ভালো নয়। তবে বিরোধী দলের সদস্যরা অধ্যক্ষের আবেদন উপেক্ষা করে তাঁদের বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন। এরপরই ওম বিড়লা তাঁর প্রথাগত সমাপ্তি বক্তৃতা শেষ করার পর লোকসভার অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেন।রাজ্যসভায় বিরোধী সদস্যরা আদানি ইস্যুতে জেপিসি তদন্তের দাবিতে উঠে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন । বারবার তাঁদের শান্ত করার আবেদনেও কাজ না হওয়ায় রাজ্যসভার অধিবেশন দুপুর২টা পর্যন্ত মুলতবি করে দেওয়া হয়।
অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণার পরই বিরোধী দলের নেতারা লোকসভা ভবনের অদূরে কনস্টিটিউশন ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সংসদকে অচল করার জন্য একমাত্র দায়ী সরকার। আদানি–কাণ্ডসহ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে যাতে আলোচনা না হয়, সরকারকে যাতে জবাবদিহি করতে না হয়, যুগ্ম সংসদীয় কমিটি যাতে গড়তে না হয়, সে জন্যই এভাবে অধিবেশন ভন্ডুল করে দেওয়া হল। বিরোধী নেতারা বলেন, ১৮-১৯টি দল সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে, দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে কোন জাদুতে আদানি সাম্রাজ্যের সম্পদ ১২ লাখ কোটি টাকায় পৌঁছায়। অথচ সরকার সংসদই অচল করে রাখল। বিরোধী দল নেতাদের পাশে রেখে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কোনো আলোচনা ছাড়াই ৫০ লাখ কোটি টাকার বাজেট ১২ মিনিটে পাস করিয়ে নেওয়া হল। শাসক দল সমস্যা সৃষ্টি করছে। তা নিয়ে আলোচনা রুখতে সভা বন্ধের ছলচাতুরি করছে। অথচ, এর জন্য বিরোধীদের দোষারোপ করছে। খাড়গে বলেন, ‘বিরোধীদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। সংসদে একটি কথাও যাতে বিরোধীরা বলতে না পারেন, সে ব্যবস্থা সরকার নিশ্চিত করেছে। আমার ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এমন অবস্থা দেখিনি।’ বৃহস্পতিবার লোকসভা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সোনিয়া গান্ধী, খাড়গের সঙ্গে বিরোধী সদস্যরা সংসদ ভবন থেকে বিজয় চক পর্যন্ত জাতীয় পতাকা হাতে হেঁটে যান। তারপর কনস্টিটিউশন ক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, মোদি সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু মানে না। বিরোধীরাই সংবিধান ও গণতন্ত্রকে আগলে রেখেছে সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস, ডিএমকে, আরজেডি, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টি, বামপন্থী দল ছাড়াও ছিল তৃণমূল কংগ্রেস, তেলেঙ্গানার বিআরএস ও দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct