সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: ‘রাস্তা দাও ভোট নাও’ স্লোগান তুলে এবার ‘ভোট বয়কটে’র ডাক দিলেন বাঁকুড়ার সিমলাপালের মাচাতোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদাগোড়া গ্রামের মানুষ। জেলার জঙ্গল মহলের আদিবাসী প্রধান এই গ্রামে ‘অনুন্নয়নে’র অভিযোগ তুলে সম্মিলীত গ্রামবাসীদের এই ‘ভোট বয়কটে’র সিদ্ধান্তে বেজায় অস্বস্তিতে শাসক শিবির। গ্রামবাসীদের সূত্রে খবর, গ্রামের সঙ্গে বহির্জগতের যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটি দীর্ঘদিন বেহাল। ঐ রাস্তা দিয়েই এলাকার মানুষ নিত্য যাতায়াত করেন। এমনকি ছাত্র ছাত্রীদের স্কুল, কলেজ যেতেও ভরসা ঐ একটি মাত্র রাস্তা। প্রায় দশ বছর মাটির ঐ রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানিয়ে প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরলেও কাজ হয়নি। অতি সম্প্রতি ঢাক ঢোল পিটিয়ে সারা রাজ্যের সাথে বাঁকুড়া জেলায় ৬৪৪ কিলোমিটার রাস্তা তৈরীতে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সূচণা হল। কিন্তু এতো সবের পরেও ‘ব্রাত্য’ আদিবাসী প্রধান গ্রামের এই রাস্তাটি। আর তাই শাসক দলের নেতাদের গালভরা ‘প্রতিশ্রুতি’ নয়, প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধ্য করতেই ‘ভোট বয়কটে’র ডাক বলেই ঐ গ্রামের মানুষ জানিয়েছেন। আর তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামের দেওয়ালে রাজনৈতিক দল গুলির প্রতীক সহ প্রচার নয়, ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে দেওয়াল ভরাচ্ছেন গ্রামের মানুষ। বিজেপির তালডাংরা ৪ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি সুদীন মণ্ডলের দাবি, বিগত বাম ও বর্তমান তৃণমূলের আমলে আদিবাসী জনজাতির মানুষ উপেক্ষিতই থেকেছেন। শুধু সিমলাপালের সিদাগোড়া নয়, এমন অনেক গ্রাম আছে যেখানে প্রকৃত উন্নয়ন হয়নি। শাসক দল ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই ঐ গ্রামের মানুষ ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেন। ‘বেহাল রাস্তা’র বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন সিমলাপাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি ফাল্গুনী সিংহবাবু। তিনি বলেন, গ্রামের মানুষের দাবি ন্যাহ্য, বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তাব দেওয়া আছে। তবে ‘ভোট বয়কট সমস্যা সমাধানের পথ নয়’। সমাধানসূত্র খুঁজতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নজরে বিষয়টি তিনি এনেছেন বলে জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct