এম মেহেদী সানি, অশোকনগর, আপনজন: আসন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে উত্তর ২৪ পরগনার শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মাটিয়াগাছায় কর্মী সম্মেলন করল ‘আইএসএফ।’ শনিবার ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ‘আইএসএফ’ বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি, অনুষ্ঠান শেষে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক বিষয় নিয়ে সরব হন নওশাদ। এ দিন তিনি হাওড়ায় রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। নওশাদ সিদ্দিকি বলেন ‘কোনোরকম অরাজকতাকে পশ্রয় দিই না আর দেবও না। আমি আগেই রামনবমীকে কেন্দ্র করে যে দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিল ওখানে তার নিন্দা জানিয়েছি। একইসঙ্গে যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দরকার। এটা সামাজিক অবক্ষয় বললে কম হবে, এই যে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ একে কোনোভাবেই পশ্রয় দেওয়া যায় না।’ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচন সম্পর্কে আমরা আতঙ্কে আছি। কেউ ভোটব্যাঙ্ককে ধরে রাখার জন্য, কেউ সংগঠনকে চাঙ্গা করার জন্য হয়তো এধরণের ঘটনা ঘটাতে পারে। সেজন্য আমরা বাংলার মানুষের স্বার্থে, বাংলার ঐক্যের কথা মাথায় রেখে, বাংলার সুনামের কথা মাথায় রেখে কোনোরকম সাম্প্রদায়িক শক্তির ফাঁদে আমরা পা দেব না। আমরা বিগত দিনে যেমন ছিলাম, সম্প্রীতির সঙ্গে আগামীদিনে তেমন থাকব।’ নওসাদ রাজ্যপালের উদ্দেশ্যে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘রাজ্যপালের আরও দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। আমি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, ওই ঘটনার তিনিও তদারকি করুন যাতে, যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।’ ‘আইএসএফ’ বিধায়ক পীরজাদা নওশাদ সিদ্দিকি এ দিন কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন ‘আমরা সমাজ বদলানোর স্বপ্ন নিয়ে পথে নেমেছি, ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন নিয়ে নয়।’ তিনি কর্মীদের সংযত থেকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বুদ্ধির সঙ্গে আন্দোলন করার পরামর্শ দেন। সম্প্রতি অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী, বিধায়ক তহবিলের প্রথম কিস্তির ৩৫ লক্ষ টাকা ইমামদের জন্য বরাদ্দ করার কথা বলেন। নারায়ণ গোস্বামীর এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে এ দিন প্রশ্ন তোলেন নওশাদ সিদ্দিকি। নওশাদের দাবি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের জন্যে এই টাকা খরচ করা যায় না, এমনভাবে বলে ইমামদেরকে আবারও বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নারায়ণ গোস্বামী জানান, ‘এটা ধর্মীয় কোন বিষয় নয়, প্রত্যেকটি ইমামই একজন মানুষ। সেই সমস্ত মানুষদেরকে সরকারি নিয়মের মধ্যে দিয়েই কিভাবে পরিষেবা দেওয়া যায় আমি সেটাই করে দেখবো, সেটা যেন নওশাদ সিদ্দিকী সাহেব দেখে শেখেন।’ অন্যদিকে ‘আইএসএফ’এর কর্মী সম্মেলন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তৃণমূল নেতৃত্বরা। হাবড়া দু’নম্বর ব্লকের সভাপতি বৃন্দাবন ঘোষ, শ্রীকৃষ্ণপুর আঞ্চলিক তৃণমূল নেতৃত্ব মোশারাফ মন্ডলরা বলেন, এলাকায় ‘আইএসএফে’র প্রভাব নেই, বহিরাগত লোক নিয়ে এসে ওরা কর্মী সম্মেলন করেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct