আপনজন ডেস্ক: ফুটবলে কুরাসাও খুব দুর্বল দেশ নয়। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৮৬তম। ডাচ ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের এই দ্বীপ দেশ জিতেছে ক্যারিবিয়ান কাপও। তবু আন্তর্জাতিক ফুটবলে কুরাসাওকে মোটেও পরিচিত নাম বলা যায় না। তবে দেশটি ফুটবলের ইতিহাসে এখন থেকে নতুনভাবে পরিচিত হতে পারে।আর্জেন্টিনার হয়ে লিওনেল মেসি তাঁর শততম গোলটি পেয়েছেন এই দলের বিপক্ষে, আর আর্জেন্টিনাও জিতেছে ৭-০ গোলে। ১৯৭৫ সালে কোপা আমেরিকায় ভেনিজুয়েলাকে ১১–০ গোলে হারানোর পর ঘরের মাঠে এটাই সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় আর্জেন্টিনার। আর সব মিলিয়ে ২০১৫ সালের পর এত বড় ব্যবধানে জিতল আর্জেন্টিনা। হিউস্টনে ৮ বছর আগে বলিভিয়াকেও একই ব্যবধানে হারিয়েছিল বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। শুধু শততম গোল নয়, হ্যাটট্রিকে উপলক্ষ্য রাঙিয়েছেন মেসি। সেটাও প্রথমার্ধেই (৩৭ মিনিটের মধ্যে), আর্জেন্টিনার জার্সিতে এর আগে কখনোই যার (প্রথমার্ধে হ্যাটট্রিক) দেখা পাননি। গত ১৮ ডিসেম্বর কাতারে বিশ্বকাপ জয়ের ঠিক ১০০ দিন পরই আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির ১০০তম গোল, কুরাসাওকে আলাদা করে মনে রাখতেই হবে। আর্জেন্টিনার সমর্থকদের অন্তত তাতে আপত্তির কোনো কারণ নেই। ধারে-ভারে কুরাসাও আর্জেন্টিনার ধারে-কাছেও নেই। এই ম্যাচ অনেকের কাছে তাই মেসির মাইলফলক অর্জনের ম্যাচ, তবে তার মধ্যেই কেউ কেউ মনে রাখবেন লাওতারো মার্তিনেজকে। কাতার বিশ্বকাপে গোল মিসের মহড়া কম দেননি, আজ ৩ মিনিটের মাথায় যে মিসটা করেছেন সেটা অফসাইড না হলে সম্ভবত ‘মিস অব দ্য সিজন’ এর তকমা পেয়ে যেত। মেসির পাসে ঠিকমতো পা ছোঁয়ালেই হতো। ইন্টার মিলান স্ট্রাইকার পারেননি। বিরতির পর প্রথম ৫ মিনিটের মধ্যে পাওয়া দুটি সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি। বেচারা মার্তিনেজ! তবে কুরাসাওয়ের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে আর্জেন্টিনার এটাই একমাত্র আক্ষেপ। বাকিটা গোলের উৎসব। মার্তিনেজের মিসটা দেখে কারও কি মনে হয়েছিল এটা গোলবন্যার বাঁধ ভাঙার ইঙ্গিত! কারণ ২০ থেকে ৩৫, এই ১৬ মিনিটের মধ্যে ৫ গোল করেছে আর্জেন্টিনা। তার মধ্যে ৩৩ থেকে ৩৭, এই ৫ মিনিটের মধ্যে করেছে ৩ গোল! হ্যাঁ, প্রথমার্ধেই ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা হয়েছিল কুরাসাওয়ের। এস্তাদিও মাদ্রে সিউদাদ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক সমর্থকদের তা ভালোই উপভোগ করার কথা।
ম্যাচের ১০ মিনিটের মধ্যে দুটি সুযোগ পাওয়া মেসির গোল মনে হয়েছে সময়ের ব্যাপার। ২০ মিনিটে জিওভান্নি লো সেলসোর বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে ডান পায়ের শটে পেয়েছেন শততম গোল। ইরানের আলী দাঈয়ি ও পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে শততম গোল করা তৃতীয় ফুটবলার মেসি। আর নিজের মহাদেশ দক্ষিণ আমেরিকায় প্রথম। মেসির গোলের দুই মিনিট পরই কুরাসাওয়ের পোস্ট কাঁপান নিকো গঞ্জালেস। পরের মিনিটে হেডে প্রাপ্য গোলটাও পেয়ে যান। লো সেলসোর দুরপাল্লার পাস থেকে করা গোলে তুলে নেন ৩৭ মিনিটে তুলে নেন আর্জেন্টিনার হয়ে নিজের ৯ম হ্যাটট্রিক, সব মিলিয়ে ৫৭তম! আর আর্জেন্টিনার হয়ে ১০২তম গোল। বক্সে কুরাসাও অধিনায়ক কুকো মার্টিনা হ্যান্ডবল করলে ৭৮ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করেন দি মারিয়া। ৮৬ মিনিটে মেসির দুর্দান্ত একটি শট রুখে দেন কুরাসাও গোলকিপার এলয় রুম। ৭ গোল হজম করলেও তিন-চারটি ভালো সেভ করেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct