এম মেহেদী সানি, হাবড়া, আপনজন: ‘আমি সিপিএমের সঙ্গে চলার পক্ষপাতি নই। এরা ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক দল!’ হাবড়া-১ ব্লক অফিসে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক সন্মেলনে ওই মন্তব্য করেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি আরও বলেন, ‘২০১১ সালে একটা শ্লোগান দিয়েছিলাম, সেটা আজও প্রযোজ্য। সিপিএমের সঙ্গে চলব না, তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক তৈরি করব না, তারা কোনও বিয়ে বাড়ি গেলে সেখানে যাব না, তাদের সঙ্গে চায়ের দোকানে গল্প করব না।’শনিবার বনমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ দিন রাজ্যের বনমন্ত্রী ও তৃণমূলের সিনিয়র নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিপরীত অবস্থান প্রকাশ করেছেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন ও পুরমন্ত্রী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘সামাজিক ভাবে বয়কট টয়কট এগুলো সব সিপিএমরা করত। আমরা এগুলোতে বিশ্বাস করি না’ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সিপিএম বাড়ির কেউ যদি অসুস্থ হয়ে তাহলে কাউন্সিলর হিসেবে বিধায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব হল দৌড়ে তাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো। যদি সিপিএমের পরিবারে দেখি কারও মৃত্যু হয়েছে তাহলে তার সাথে শ্মশানযাত্রী হিসেবে যাওয়া এটা আমার কাছে মানবিক কর্তব্য। সুতরাং, মানুষ হিসেবে আগে আমার মানবিক কর্তব্য পালন করব। বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এদিকে, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মন্তব্যকে খারিজ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী। তার পাল্টা দাবি, ‘জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের থেকে এর থেকে ভাল কিছু কথা আর কী আশা করা যায়? এরা অসামাজিক। ওরা শুধু দুর্নীতিপরায়ণই নন,অসামাজিক।’ তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে তার প্রশ্ন, ‘১১ বছরের দুর্নীতিতে কারও কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারলেন না কেন? ওদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ তো কোর্টে প্রমাণিত হবে। মিথ্যে মামলা-মোকদ্দমা কম দেননি। ওতে আমরা ভয় পাই না’ বলেও মন্তব্য করেছেন সিপিএম নেতা মৃণাল চক্রবর্তী।মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সিপিএমের আমলের দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি সমস্ত দফতরের তদন্ত করেন, তবে সিপিএমের নেতাদের যে কী হাল হবে, তারা বুঝতে পারছেন না। শিক্ষা দফতর দিয়ে শুরু হয়েছে। অডিটর জেনারেল বলছে, ৪৬ হাজার নাম বেরিয়েছে। সত্য তো উদ্ঘাটন করা উচিত। এ সব জনসমক্ষে নিয়ে আসা উচিত।’ মন্ত্রীর এ ধরণের মন্তব্যের পরেই সিপিএম নেতা মৃণাল চক্রবর্তী পাল্টা কটাক্ষ করেছেন।জানা গিয়েছে এ দিন হাবড়া-১ ব্লক অফিসে ‘দুয়ারে ডাক্তার’ পরিষেবার মধ্যে দিয়ে উপকৃত হয়েছেন বহু সাধারণ মানুষ, শনিবার বারাসাত হাসপাতালের সুপার সহ জেলার একাধিক বিশেষজ্ঞ সম্পূর্ণ বিনা খরচে ডাক্তারি পরিষেবার দেওয়ার পাশাপাশি ঔষধ বিতরণ করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct