পরিবেশ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। সজীব ও অজীব উপাদান সমন্বয়ে পরিবেশ গঠিত হয়েছে। পরিবেশ তথা জীবজগতের উৎপত্তি এবং বিকাশ লাভের উৎস স্থল হল বারিমন্ডল। প্রসঙ্গত পৃথিবীতে অবস্থিত জল সম্পদের বন্টন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৯৭.২% জল সমুদ্র ও মহাসাগরের, যা লবণাক্ত এবং ব্যবহার অযোগ্য। ২.১৫% জল তুষার ও হিমবাহ সৃষ্ট। নদী খাল বিল ঝরনাতে রয়েছে ০.৬২ % জল। ভূগর্ভস্থ ও ভূপৃষ্ঠস্থ জলের পরিমাণ ০.৬৮%। ব্যবহারযোগ্য জল সম্পদ পৃথিবীতে খুবই সীমিত। ২২ মার্চ আন্তর্জাতিক জল দিবস নিয়ে লিখেছেন সজল মজুমদার।
পরিবেশ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। আমাদের আশেপাশে সজীব এবং অজীব উপাদান গুলোর সমন্বয়ে পরিবেশ গঠিত হয়েছে। পরিবেশ তথা জীবজগতের উৎপত্তি এবং বিকাশ লাভের উৎস স্থল হল বারিমন্ডল। প্রসঙ্গত পৃথিবীতে অবস্থিত জল সম্পদের বন্টন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ৯৭.২% জল সমুদ্র ও মহাসাগরের, যা লবণাক্ত এবং ব্যবহার অযোগ্য। ২.১৫% জল তুষার ও হিমবাহ সৃষ্ট। নদী খাল বিল ঝরনা ইত্যাদিতে রয়েছে ০.৬২ % জল। ভূ গর্ভস্থ ও ভূ পৃষ্ঠস্থ জলের পরিমাণ ০.৬৮% । অর্থাৎ আপাত দৃষ্টিতে বোঝা যাচ্ছে যে, ব্যবহারযোগ্য জল সম্পদের পরিমাণ পৃথিবীতে খুবই সীমিত। তথাপি বহুমূল্য এই জল সম্পদ আমাদের বহুবিধ কারণের দ্বারাই প্রতিনিয়তই নিঃশেষের দিকে। প্রসঙ্গত composite water management index এবং কেন্দ্রীয় সরকারের NITI আয়োগের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় জনসংখ্যার ৪০% মানুষ এক ফোটা পানীয় জলের জন্য হাহাকার করবে। ২০৫০ সাল নাগাদ ভয়াবহ জল সংকটে পড়তে চলেছে গোটা দেশই। নগরায়নের প্রত্যক্ষ প্রভাবে রাজ্যের অন্তর্গত বিভিন্ন জেলাগুলির শহরাঞ্চলগুলিতে ভূগর্ভস্থ জলস্তর তলানির দিকে নেমে চলেছে। পাশাপাশি দেশে অবস্থিত বিভিন্ন ছোট-বড় নদীগুলো প্রতিনিয়ত প্রত্যক্ষভাবে জলদূষণের শিকার হয়ে চলেছে। সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদপত্রেও জলাশয় বুজিয়ে নির্মাণ,বিভিন্ন এলাকার ভূগর্ভস্থ জলস্তর সংকট সম্পর্কিত উদ্বেগ জনক খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মোদ্দা কথা হচ্ছে ,আগামী দিনগুলোতেও কি বর্তমান সময়ের মতো নদী ,পরিবেশ, এবং জল নিয়ে আন্দোলনের মাত্রা আরো বাড়তে চলেছে!! পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় কতিপয় মানুষ ছাড়া বৃহৎ গোষ্ঠীর সংবেদনশীল মানুষের সংখ্যা কি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে!! জল, জলাভূমি ,সামগ্রিক জল সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনায় বর্তমান বিশ্ব কতটা এগিয়েছে!! বিশ্ব উষ্ণায়নের দাপটে মেরু অঞ্চলে হিমবাহের ক্রমাগত গলন কতটা রোধ করা সম্ভব হয়েছে!! বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংক্রান্ত বিভিন্ন খবর গুলোর বাইরে বিশ্বব্যাপী ঘটে যাওয়া পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলো সাধারণ মানুষ কতটা রেখে চলেছে!!! এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিশ্ব জল দিবস উদযাপন নিছকই একদিনের প্রতীকি একটা মহৎ উদ্যোগ নাকি এই দিবস উদযাপন বর্তমানে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং প্রাসঙ্গিক!! এসব গোটাকয়েক প্রশ্ন মনের অন্দরেই ঘোরাফেরা করছে। প্রসঙ্গত জাতিসংঘের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বে এখনো ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ জলের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছেন। জল সম্পদের এই গুরুত্ব কে উপলব্ধি করেই ১৯৯৩ সাল থেকে জল এবং জনস্বাস্থ্য সমস্যা কে সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘ ২২ সে মার্চ দিনটিকেই বিশ্ব জল দিবস হিসেবে উদযাপন করে চলেছে। এবছরের জল দিবস উদযাপনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হল, জল এবং জনস্বাস্থ্য সমস্যা সমাধান করবার জন্য প্রয়োজনীয় দৈনন্দিন চাহিদার পরিবর্তন এবং ত্বরান্বিতকরণ। সৌভাগ্যবশত জাতিসংঘ আয়োজিত ২০২৩ ওয়াটার কনফারেন্স এবং এই বছরের জল দিবস একই সময়ে পালিত হতে চলেছে। উক্ত এই ওয়াটার কনফারেন্সে ওয়াটার অ্যাকশন এজেন্ডার অধীনে জল সংরক্ষণে বিশ্বব্যাপী প্রচার অভিযান চালানো হবে। যেটির বিষয় হলো, Be the change,you want see in the world । এছাড়াও সহনশীল উন্নয়নের ক্ষেত্রে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিশ্বের সকল দেশ, সমাজের সকল ক্ষেত্রে জল বিষয়ক সচেতনতা গভীরভাবে পৌঁছে দেওয়াও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই জলাশয় খনন, বৃক্ষরোপণ, বনসৃজন, জলের বেসরকারিকরণ রোধ, বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, নদী সংস্কার, জল দূষণ রোধ, জলের গুণমান বজায় রাখা, সুষ্ঠু জলনীতি প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি সু নজর দিলেই বিশ্ব জল দিবস পালনের যথার্থতা সার্থক হয়ে উঠবে আশা করা যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct