নকীবউদ্দিন গাজী, ডায়মন্ডহারবার, আপনজন: সদ্য শিশুকন্যা চার মাসেতখন সবে ওরা ঘুম থেকে উঠেছে ওরা জানেনা আজ ওদের ঠিকানা বদলের দিন। এতদিন ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে এসএন সি ইউ বিভাগে নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কোলে খুনসুটি করে গত কয়েকমাস দিন কেটেছে দুই শিশুর। তাদের বয়স এখন ৩ মাস ও ৬ মাস ওদের নির্দিষ্ট কোন নাম নেই কেউ ভালোবেসে ডাকতো রিমঝিম কেউ আবার ডাকতো পুতুল কেউ আবার ডাকতো সুস্মিতা নাম ধরে। দুই শিশুর জন্ম হয় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে কিন্তু দুই শিশু কন্যার বাবার পরিচয় কারোর জানা নেই। এক শিশু কন্যার মা থাকলেও তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। গত কয়েক মাস আগে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতাল এক অজ্ঞাত পরিচয় নবজাতক শিশুর খোঁজ পান এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার পরেই ওই শিশুকে উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালের এস এন সি ইউ বিভাগে ভর্তি করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্য শিশুটির মা সুনিতা এক মানসিক ভারসাম্যহীন। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরপর হাসপাতলে শিশু কন্যার জন্ম দেন ওই মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা। তারপর থেকেই দুই শিশুকন্যা আস্তে আস্তে বেড়ে উঠছিল হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু এদিন সকাল থেকেই শিশু বিভাগের নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মন খারাপ কারণ ফুট ফুটে শিশু কন্যা রিমঝিম ও পুতুলকে সরকারি নিয়ম মেনে হোমে নিয়ে যাওয়া হবে। ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ, চাইল্ড লাইন ও সি ডব্লুই সির উদ্যোগে। দুই শিশু কন্যাকে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতাল থেকে নিয়ে পাঠানো হলো হোমে। সেখানেই বড় হবে পুতুল ও রিমঝিম। তাই সকাল থেকে বিষাদের সুর হাসপাতালের এস এন সি ইউ বিভাগে। যদিও দুই শিশুকন্যাকে নতুন পোশাক পরিয়ে সুন্দর করে কপালে টিপ পরিয়ে দেন নার্সরা।বিদায় বেলায় নার্স ও দিদিমণিদের আদরে এক কোল থেকে আর এক কোল ঘুরে বেড়াচ্ছিলো পুতুল ও রিমঝিম। অবশ্য দুই শিশু কন্যা আগামী দিনে হয়তো কোন এক নতুন ঠিকানায় বড় হয়ে উঠবে তবে কোনদিনই হয়তো তারা জানবে না কারা ছিল ওদের বাবা-মা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct