আপনজন ডেস্ক: নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের জন্য একটি নোটিশ দিয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্থাপিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অমর্ত্য সেন বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন। রোববার তাঁর বাসভবনে গিয়ে একটি নোটিশ দিয়ে এসেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ২৯ মার্চের মধ্যে অমর্ত্য সেন অথবা তাঁর কোনো প্রতিনিধিকে বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক ভবনের জমিবিষয়ক শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হবে। চিঠিটি বিশ্বভারতীর যুগ্ম রেজিস্ট্রার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তিবিষয়ক আধিকারিকের তরফে গত শুক্রবার পাঠানো হয়েছে। কেন অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের উচ্ছেদ আইন প্রয়োগ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। বিশ্বভারতীর চিঠিতে আরও বলা হয়, অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর ১৩ ডেসিমেল (৫২৬ বর্গমিটার) জমি দখল করে রেখেছেন। উচ্ছেদ আইন প্রয়োগ করে কেন তাঁকে ওই জমি থেকে সরানো হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
এই জমি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, অমর্ত্য সেনের পিতা আশুতোষ সেনকে ১ দশমিক ২৫ ডেসিমেল জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজ হিসেবে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৩ ডেসিমেল জমি অধ্যাপক সেন অধিকার করে রেখেছেন। ওই ১৩ ডেসিমেল ফেরত চায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। অমর্ত্য সেন পাল্টা দাবি করেন, তাঁর শান্তিনিকেতনের বাড়ির জমির একটা অংশ বিশ্বভারতীর থেকে অবশ্যই লিজ নেওয়া, কিছুটা জমি কেনা। এখন কর্তৃপক্ষ সত্য গোপন করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে শান্তিনিকেতনে গিয়ে অমর্ত্য সেনের সঙ্গে দেখা করেন। নিজেই জমির তথ্য ও দলিল সংরক্ষণবিষয়ক দপ্তরে গিয়ে নথিপত্র জোগাড়ের ব্যবস্থা করেন মমতা এবং জমির কাগজপত্রও অধ্যাপক সেনের হাতে তুলে দেন। বিশ্বভারতীর উপাচার্যকেও হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, এ ঘটনায় রাজ্য সরকার আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। কারণ, এই জমি রাজ্য সরকারই বিশ্বভারতীকে দিয়েছে। আশুতোষ সেনের পরিবর্তে জমির লিজ নিজের নামে নথিভুক্ত করার জন্য কিছুদিন আগে আবেদন করেছিলেন অমর্ত্য সেন। বোলপুর ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরে শুনানিও হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা। কিন্তু দীর্ঘ সওয়াল জবাবের পর কোনো মীমাংসা হয়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct