দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের সাম্প্রতিক ভয়াবহ পরিসংখ্যানের তথ্য উদ্বেগ বাড়িয়েছে মালদা জেলার বামনগোলায়। উল্লেখ্য গত ১১ই ফেব্রুয়ারি পাকুয়াহাট যদুনাথ বালিকা বিদ্যালয়ে ভারত স্কাউটস্ এন্ড গাইডস্ মালদা জেলা শাখা, পাকুয়াহাট সমবেত প্রয়াস ও মালদা মেডিক্যাল কলেজ থ্যালাসেমিয়া ইউনিটের সহযোগিতায় থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের ক্যাম্প হয়েছিল। সেই ক্যাম্পে ১১৬ জনের রক্ত পরীক্ষা হয়েছিল। সম্প্রতি থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ের ফলাফলের ভয়াবহ তথ্য সামনে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে বিভিন্ন মহলের মানুষজনের। পাওয়া তথ্য থেকে জানা গিয়েছে, ১১৬ জনের মধ্যে ১৭ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী এবং ৩৩ জন থ্যালাসেমিয়ার বাহক শনাক্ত হয়েছে। ভারত স্কাউটস্ অ্যান্ড গাইডস্ মালদা জেলা শাখার জেলা রক্তদান শিবিরের আহ্বায়ক অনিল কুমার সাহা নিজেও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ গোটা পশ্চিমবঙ্গে যেখানে সংখ্যাটা ১০ থেকে ১২ শতাংশ। সেখানে বামনগোলার সংখ্যাটা নিঃসন্দেহে চমকে যাওয়ার মতোই বটে। মালদা জেলার সাধারণ মানুষজন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি এখনই তৎপর না হয় তবে আগামীতে থ্যালাসেমিয়া ভয়াবহ রূপ নিবে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই। পাকুয়াহাট যদুনাথ বালিকা বিদ্যালয়ে থ্যালাসেমিয়া নির্ণয় ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১১ ফেব্রুয়ারি। ওই ক্যাম্পে ১১৬ জনের মধ্য ১৭ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী এবং ৩৩ জন থ্যালাসেমিয়া বাহক নির্ণয় হয়েছে। যা খুব দুশ্চিন্তার। বছর তিনেক আগেও ক্যাম্প করে পাকুয়াহাটে ১০০ জনের রক্ত সংগ্রহ করলে ৫৪ জন থ্যালাসেমিয়া বাহক পাওয়া গিয়েছিল। বামনগোলার বিএমওএইচ সুদীপ কুন্ডু নিজেও থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া জেনেটিক রোগ। তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বামনগোলার উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে থ্যালাসেমিয়া নিয়েও প্রতি শুক্রবার সচেতনতা মূলক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক পাত্র পাত্রীর বিয়ের আগে কুষ্ঠী, ঠিকুজি বিচার না করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে থ্যালাসেমিয়া নির্ণয়ে রক্ত পরীক্ষা করানো উচিৎ। কেউ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বা বাহক হলে ওই পরিবারের সকল সদস্যদেরও বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা করানো হবে। সচেতনতাই থ্যালাসেমিয়া দুরিকরনের প্রধান হাতিয়ার।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct