সেখ রিয়াজুদ্দিন, বোলপুর, আপনজন: বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল কেন্দ্রীয় তদন্ত আধিকারিকদের হেফাজতে আটক হতেই বিরোধী শিবিরের সূর দিনদিন বেড়ে চলেছে।নানান অভিযোগে তৃণমূল নেতাদের প্রতি বিক্ষোভ প্রদর্শনের চিত্র ও ফুটে উঠছে।অনুরূপ অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত- পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল কেরিম খানের বিরুদ্ধে ও বিক্ষোভ সংগঠিত হয় নানুর এলাকায়। অভিযোগ নানুরের বাসাপাড়ায় কিষাণ মান্ডি সংলগ্ন এলাকায় মিলনমেলার নামে প্রায় ৪৫ বিঘা জমি ২০ থেকে ২৫ জন জমি মালিকের থেকে একপ্রকার জোরজবরদস্তি ও বলপূর্বক জমির দখল নেয়। মিলন মেলা মাঠের নাম করে, দলের ক্ষমতা অপব্যবহার করে একের পর এক জমি হাতিয়েছেন। যদিও ওই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুল কেরিম খান।উল্লেখ্য গরুপাচার মামলায় আব্দুল কেরিম খানের নানুরের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়,এমনকি একাধিকবার জেরা ও করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা। মঙ্গলবার তাঁর বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ এনে জমি ফেরত পেতে হাতে দলিল নিয়ে মিলন মেলা প্রাঙ্গনেই বিক্ষোভ দেখালেন জমি মালিকরা।জানা যায় যে,নানুরের বাসাপাড়ায় প্রতিবছর ১লা জানুয়ারি থেকে নানুর তৃণমূল কংগ্রেসের আয়োজনেই মিলনমেলা আয়োজন করা হয়ে থাকে । গত ৬ বছর ধরে এই মেলার আয়োজন করে আসছেন তৃণমূল নেতাআব্দুল কেরিম খান।তৃণমূল বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকে মেলা কমিটির নামে মাঠ অধিগ্রহণ শুরু করেন কেরিম খান। প্রতিবছর মিলনমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনুব্রত মন্ডলকে দেওয়া হতো বিশেষ উপহার। কখনো রুপোর মুকুট, আবার কখনো রুপোর তরবারি। এদিন জমি দাতাদের হাতে দলিল ও কাগজপত্র সহ নানুরের বাসাপাড়া এলাকায় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।জমিদাতা আরোবা বিবি, শেখ নুরজাহান, শেখ সাদ্দাম হোসেনদের অভিযোগ, বাসাপাড়া মিলনমেলা মাঠের নাম করে কেরিম খান জোড়পূর্বক তাঁদের জমি দখল করেছে। যদিও ওই তৃণমূল নেতা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সম্পূর্ণ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আব্দুল কেরিম খান জানান,আমরা গ্রামের মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠক করেছিলাম। সেই বৈঠকে বাসাপাড়া মিলন মেলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নামে এই জমিগুলি কেনা হয়। মেলার মাঠের এই জমি এলাকার মানুষ স্বেচ্ছায় দিয়েছেন। কোন অবৈধ কাজ করা হয়নি। সিপিআইএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানান, মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। যত দিন যাবে মানুষ প্রতিবাদে সোচ্চার হবেন। ‘লায়েক গাথার নায়ক খোঁজে’ নামে ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট থেকে লায়েক বিদ্রোহের ওপর সম্প্রতি একটি বইও প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। সুস্মিতা বলেন, এলাকা পরিদর্শনে আসুক রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহের পীঠস্থান গড়বেতা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ড্রিম প্রোজেক্ট গড়বেতায় পর্যটনকেন্দ্র। আর এই পর্যটন কেন্দ্র থেকেই সামান্য দূরে রয়েছে ঐতিহাসিক একাধিক স্থাপত্য। সুস্মিতা বলেন, খাতায়-কলমে প্রত্নতাত্ত্বিক ও হেরিটেজ মর্যাদা পেলে, সমগ্র এলাকাটিকে হেরিটেজ জোন হিসেবে মান্যতা দেওয়া হলে এবং হেরিটেজ সার্কিটে এই অঞ্চল স্থান পেলে রাজ্যের মুকুটে যুক্ত হবে আরও একটি নতুন পালক। এই ঐতিহ্য জেলা, রাজ্য তথা সমগ্র দেশের। বেশ কিছু জায়গা চিহ্নিত করে খননকার্যের আবেদনও জানিয়েছেন তরুণী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct