নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আপনজন: কোভিডকালে বাংলার মানুষদের বাড়িতে বাড়িতে রেশন পৌঁছে দিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। দুয়ারে দুয়ারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য পৌঁছে দেওয়ার সেই প্রকল্প চালাতে নারাজ একশ্রেনীর রেশন ডিলাররা। তাঁরা এই কারণে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে একসময় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। হাইকোর্ট ডিলারদের দাবি মেনে নিয়ে এই প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার মামলা করে দেশের শীর্ষ আদালতে অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাতেই এদিন দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্ট। তবে ততদিন রাজ্যের নির্দেশ মেনে রেশন ডিলারদের ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালাতে হবে। মঙ্গলবার মৌখিক পর্যবেক্ষণে এমনই কথা জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সে বছর নভেম্বরে চালু হয় প্রকল্পটি। এই প্রকল্প চালু হওয়ার জেরে পাহাড় ও জঙ্গলমহলের দূরবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দারা এই প্রকল্পে দারুণ সুবিধা পাচ্ছিলেন। প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট সময় রেশন দোকান থেকে মালিক ও খাদ্যদফতরের এক প্রতিনিধি-সহ রেশন কর্মীরা সেসব জায়গায় গিয়ে দুয়ারে রেশন বণ্টন করছিলেন। কিন্তু প্রকল্পের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে ডিলারদেরই একাংশ। শুনানি শেষে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনতার পরিষেবার মতো বৃহত্তর স্বার্থের কথা বলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য প্রশাসন। সেই মামলায় হাইকোর্টের ওই রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে স্থিতাবস্থার কথা বলে শীর্ষ আদালত। অর্থাৎ যেমন প্রকল্প চলছিল, তেমনই চলবে। বন্ধ করতে হবে না।সেই মামলারই এদিন শুনানি ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার রিজয়েন্ডার জমা না করায় এদিন মামলার শুনানি হয়নি। এদিন আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে সব পক্ষের কাছে হলফনামা তলব করেছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি কেন্দ্রকেও হলফনামা জমা দিতেও ২ সপ্তাহ সময় দিয়েছে শীর্ষ আদালত। পরের দু’সপ্তাহ রেশন ডিলারদের জবাব দেওয়ার সময় দেওয়া হয়েছে। এদিন দুয়ারে রেশন প্রকল্পের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দাবি করেছিলেন রেশন ডিলাররা। কিন্তু তাদের সেই আরজি মঞ্জুর করেননি বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ১৪ এপ্রিল।
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct