সুব্রত রায়, কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ’র দ্বারস্থ হলেন রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের ১৪২ জন চাকরিহারা গ্রুপ সি কর্মী। গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৮৪২জন গ্রুপ সি’ র কর্মীর চাকরি খারিজ করে দিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকেই ১৪২জন এদিন সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ-এ মামলা ঠুকেছেন। মনে করা হচ্ছে চলতি সপ্তাহেই বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হতে পারে।স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এস এস সি’র মাধ্যমে চাকরি পাওয়া গ্রপসি’র ৮৪২জনের চাকরি গত শুক্রবার খারিজ করে দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টেরবিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি তাঁর নির্দেশে জানিয়ে দিয়েছিলেন শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে কর্মরত ওই ৮৪২জনের চাকরি বাতিল করবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এর পাশাপাশি তিনি এস এস সি কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সুপারিশপত্র ছাড়া চাকরি দেওয়া হয়েছে এমন যে ৫৭ জন গ্রুপ সি’র কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাঁদের নামের তালিকা শুক্রবারই পরবর্তী দু’ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনে সেদিনই ২টো ৩১ মিনিটেই এস এস সি’র ওয়েবসাইটে সেই তালিকা প্রকাশ করে দেওয়া হয়।গত বছর সন্দীপ প্রসাদের দায়ের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছিল, এস এস সি’রগ্রুপ সি’ র পদে প্রায় ৩৫০ জন কর্মীকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। সেই মামলাতেই গ্রুপ সি’র পদে কর্মরত ৫৭ জনের সন্ধান মিলেছিল যারা এসএসসির কোনও সুপারিশপত্র ছাড়াই চাকরি করছেন।
এদের চাকরি বাতিলের পাশাপাশি যারা নম্বর গরমিল করে চাকরি পেয়েছেন এমন ৮৪২জনের চাকরি বাতিল করার দাবিও উঠেছিল। সেই সূত্রেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়ে দেন গ্রুপ সি’র পদে কর্মরত ওই ৫৭ জন সহ মোট ৮৪২জনের চাকরি খারিজ করা হচ্ছে। শনিবার বেলা ১২টার মধ্যে স্কুল সার্ভিস কমিশন ৭৮৮জনের সুপারিশপত্র বাতিল করবে যারা কমিশনের সুপারিশপত্র নিয়ে চাকরি করছেন। ৫৭জনের যেহেতু সুপারিশপত্র নেই তাই তাঁদের সুপারিশ পত্র বাতিলের কোনও গল্পও নেই। শনিবার বিকাল ৩টের মধ্যে এই ৮৪২জনের নিয়োগপত্র বাতিল করবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এমনই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচাপতি গঙ্গোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সেদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, এই ৮৪২জন আর স্কুলে আসতে পারবে না। এরা স্কুলের ভিতর ঢুকতেও পারবে না। সেই সঙ্গে স্কুলের কোনও জিনিসে হাতও দিতে পারবে না। পাশাপাশি তিনি স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছেন আগামী ১০ দিনের মধ্যে মেরিট লিস্ট-এ যাদের নাম রয়েছে তাঁদের মধ্যে থেকে এই ৮৪২টি শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ একই দিনে কলকাতা হাইকোর্ট ৮৪২জনের চাকরি বাতিল করল ও নতুন ৮৪২জনকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct