সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া, আপনজন: বাঁকুড়া শহরের ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা হিসাবে পরিচিত স্টেশন চত্বর। এই স্টেশনের অদূরেই রয়েছে রেলের সাইডিং। একসময় এই সাইডিং এ স্পঞ্জ আয়রনের কাঁচামাল ওঠানামা করত। স্পঞ্জ আয়রনের কাঁচামালের দূষনে জেরবার এলাকাবাসী লাগাতার আন্দোলনে নামেন। শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসীর চাপের মুখে পড়ে ওই সাইডিংয়ে স্পঞ্জ আয়রনের কাঁচামাল ওঠানো নামানো বন্ধ হয়। কিন্তু বছর দুয়েক আগে দেখা দেয় নতুন সমস্যা। কোভিডের ডামাডোলের সুযোগ নিয়ে রাতারাতি ওই সাইডিংয়ে শুরু হয় কয়লার কারবার। বড়জোড়া এলাকায় থাকা পিডিসিএল এর খোলামুখ কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা নির্দিষ্ট একটি পরিবহন সংস্থার ডাম্পারের সাহায্যে সড়কপথে আনার কাজ শুরু হয়। স্থানীয়দের দাবী ওই সংস্থার কয়েকশো ডাম্পার প্রতিদিন কয়লা বোঝাই করে সাইডিং এ এনে জড়ো করে। পরে রেলের রেকে পুনরায় তা বোঝাই করে নিয়ে চলে যাওয়া হয় অন্যত্র। এভাবে কয়লা পরিবহনের গোড়ার দিকে প্রতিবাদ জানান স্থানীয় মানুষ। অভিযোগ সেই সময় পরিবহনকারী সংস্থার তরফে এলাকাবাসীকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এলাকার কাঁচা রাস্তা পাকা করে তবেই কয়লা পরিবহন করা হবে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাস্তায় ও কয়লার গাদায় নিয়মিত জল ছেটানো হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির কোনোটাই পালন করা হয়নি বলে অভিযোগ। এরফলে কয়লা ওঠানো নামানোর ক্ষেত্রে যে কয়লার গুঁড়ো বাতাসে উড়ছে তা গিয়ে জমা হচ্ছে বাঁকুড়া শহরের আশপাশের বেলগড়িয়া, কায়তার পাড়া, আশ্রমপাড়া, শ্যামদাসপুর, কমরারমাঠ সহ ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ওই এলাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে শিশু ও বৃদ্ধদের একটা বড় অংশ শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানির বাঁকুড়া সদর থানার এক আধিকারিক। এলাকার মানুষের সাথে কথা বলার সময় তাকে ঘিরে প্রবল বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। স্থানীয়দের দাবি দূষণ এড়াতে নিয়ম অনুযায়ী লোকালয় থেকে দূরে এই ধরনের সাইডিং করার নিয়ম থাকলেও কার্যত গায়ের জোরে কয়লা পরিবহনকারী সংস্থা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কয়লা পরিবহন করে চলেছে। অবিলম্বে ওই সাইডিং বন্ধ না করলে আগামীদিনে আরো বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এলাকাবাসী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct